নিজস্ব প্রতিবেদক : পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে ‘সম্মান রক্ষার নামে’ এক দম্পতিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে মরুভূমিতে নিয়ে গিয়ে দম্পতিকে হত্যা করার নৃশংসতা দেখতে পেয়ে নড়ে বসেছেন তারকারা। সামাজিক মাধ্যমে তারা একের পর এক বার্তায় এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এ সমাজ নারীদের ঘৃণা করে এবং মানবতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।
সোমবার (২১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে জিও নিউজ।
গত মাসে বেলুচিস্তানের দাগারিতে এক স্থানীয় উপজাতীয় জির্গার আদেশে এক দম্পতিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। প্রাদেশিক রাজধানীর উপকণ্ঠে এই দাগারি অঞ্চলে ঘটনাটি ঘটে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ঘটনাটি দেশটির সর্বস্তরে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ভিডিওতে দেখা যায়, একদল পুরুষ একটি গাড়ি থেকে এক দম্পতিকে নামিয়ে মরুভূমির দিকে নিয়ে যাচ্ছে এবং সেখানেই তাদের কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
অভিনেত্রী হানিয়া আমির ইনস্টাগ্রামে একটি শক্তিশালী বার্তা শেয়ার করে পাকিস্তানে লিঙ্গভিত্তিক বৃহত্তর বৈষম্যের বিষয়টি সামনে আনেন। তার পোস্টে লেখা ছিল, ‘যদি নারীরা সম্মানের জন্য হত্যা করা শুরু করে, তাহলে কোনো পুরুষ বেঁচে থাকবে না।’
তমকেনাত মনসুরও এই হত্যাকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই সমাজ নারীদের ঘৃণা করে।’ বেলুচিস্তানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
অভিনেতা নওমান ইজাজসহ আরও অনেক তারকা একের পর এক হৃদয়স্পর্শী বার্তা শেয়ার করে ঘটনাটিকে ‘অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও হৃদয়বিদারক’ এবং ‘মানবতার প্রতি গভীর, কাঁচা বিশ্বাসঘাতকতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
মডেল হিরা খান নিহতদের জন্য প্রার্থনা করে তার বার্তায় উল্লেখ করেন, ‘আমরা তোমাদের এবং আরও অনেককে ব্যর্থ করেছি,’ যা দেশে ক্রমবর্ধমান সম্মান রক্ষার নামে হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা বৃদ্ধির বাস্তবতাকে সামনে আনে।
র্যাপার তালহা ইউনুস (যং স্টানার্স) তার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে এই ঘটনার সংবাদ শেয়ার করেন।
২০২৪ এবং ২০২৫ সালে পাকিস্তানে ‘সম্মান’ রক্ষা বা অনার কিলিংয়ের নামে একাধিক নারীর জীবন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সমাজে গভীরভাবে প্রোথিত এমন ধারণা থেকে এই হত্যাকাণ্ডগুলো সংঘটিত হচ্ছে, যেখানে কিছু কাজকে ‘অসম্মানজনক’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে মোট ৩৪৬ জন মানুষ ‘সম্মান’ রক্ষার নামে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
এদিকে, আরও অনেক তারকা ও বিশিষ্টজন এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং সামাজিক মাধ্যমে তাদের মতামত প্রকাশ করে যাচ্ছেন। বিষয়টি এখনো বিকাশমান রয়েছে।
এনডিটিভিবিডি/২২জুলাই/এএ