ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের একপর্যায়ে হরমুজ প্রণালি বন্ধের হুমকি দেয় ইরান। তেল সরবরাহ চেইন ঠিক রাখতে বড় ভূমিকা রাখা এ প্রণালি বন্ধের হুমকিতে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। আলোচনায় আসে বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়টিও।
বিশেষ করে সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) জ্বালানি তেলের কৌশলগত মজুত সক্ষমতা নিয়ে নতুন করে ভাবনা তৈরি করেছে এ বৈশ্বিক সংকট। বর্তমানে বিপিসির স্টোরেজ সক্ষমতা রয়েছে তাতে সাকুল্যে দুই মাসের জ্বালানির জোগান হতে পারে। যুদ্ধ কিংবা বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে দীর্ঘ মেয়াদে আমদানির সুযোগ না থাকলেও বিপদের কারণ হতে পারে জ্বালানি সংকট।
গত পাঁচ বছরের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, কখনো স্থিতিশীল ছিল না কিংবা ক্রমান্বয়ে বাড়েনি বিপিসির মজুত সক্ষমতা। ২০১৯ সালের ১ জুলাই বিপিসির জ্বালানি পণ্যের মজুত সক্ষমতা ছিল ১৩ লাখ ২০ হাজার ২৯০ টন। পরের বছর ২০২০ সালের ১ জুলাই মজুত সক্ষমতা কমে দাঁড়ায় ১৩ লাখ ৩ হাজার ৫০৫ টনে। ২০২১ সালের একই সময়ে ধারণক্ষমতা উন্নীত হয় ১৩ লাখ ৮ হাজার ৮৪৭ টনে। ২০২৪ সালের ১ জুলাই বিপিসির মজুত সক্ষমতা দাঁড়ায় ১৩ লাখ ২৫ হাজার ৫৩০ টনে।
এদিকে অন্য পেট্রোলিয়াম জ্বালানির মজুত সক্ষমতা বাড়লেও পাঁচ বছরে ডিজেল মজুতের অবকাঠামোগত সক্ষমতা কমে ২৩ হাজার ৭২৯ টন। ২০১৯ সালের ১ জুলাই যেখানে ডিজেলের মজুত সক্ষমতা ছিল ৬ লাখ ২৭ হাজার ৭৯২ টন, সেখানে পাঁচ বছর পরে এসে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৪ হাজার ৬৩ টনে।
আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থাগুলোর প্রমিত মান অনুযায়ী, আমদানিনির্ভর দেশগুলোর আপদকালীন ব্যবহারের জন্য স্বাভাবিক অবস্থায়ও অন্তত ৯০ দিনের জ্বালানি তেল মজুত রাখা উচিত। বিপিসির ২৩ জুনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান মজুতে ডিজেল ২৭ দিন, অকটেন ৭ দিন, পেট্রোল ৮ দিন, ফার্নেস ও জেট ফুয়েল ২৮ দিন চলতে পারবে।
পরবর্তীসময়ে বিপিসি গঠিত নতুন পেট্রোলিয়াম ট্রান্সমিশন কোম্পানির নতুন চার প্রকল্পে দুই লাখ ৫৮ হাজার ৮শ টন ধারণক্ষমতার নতুন ট্যাংক ফার্ম নির্মাণ করা হয়। এতে ডিজেলসহ অন্য পণ্যগুলোর কৌশলগত মজুত সক্ষমতা বেড়ে ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ৩৩০ টনে দাঁড়ায়।