নিজস্ব প্রতিবেদক :পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থানার নদমূলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটিতে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত ব্যক্তির নাম প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কৃত কোনো ব্যক্তিকে তারা অ্যাডহক কমিটিতে দেখতে চান না।
জানা গেছে, স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিশির কুমার বড়াল ও সহকারী শিক্ষক আবদুস সবুর হাওলাদার ১০ থেকে ১২ দিন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নামের ওই প্রস্তাব পাঠান। বিষয়টি তিন আগে প্রকাশ পাওয়ার পর স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
স্থানীয় সূত্র বলছে, পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থানার ২ নম্বর নদমূলা শিয়ালকাঠি ইউয়নের নদমূলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটিতে সভাপতি হিসেবে মো. আলমগীর হোসেন সরদার, আবদুল মান্নান তালুকদার ফরিদ ও মো. শফিকুল কবির তালুকদারের নাম প্রস্তাব করা হয়। এদের মধ্যে ১ নম্বরে আলমগীরের নাম দেওয়া হয়। নিয়মানুযায়ী যার নাম ১ নম্বরে থাকবে তাকেই জেলা প্রশাসক সভাপতি হিসেবে নিয়োগ দেবেন।
জানা গেছে, আলমগীর হোসেন সরদার ভান্ডারিয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু ২০২৪ সালের দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে তার স্ত্রী কাউন্সিলর পদে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এ ব্যাপারে আলমগীর হোসেন সরদার বলেন, ‘আমার বয়স ৪৪ বছর। জীবনের পুরোটাই সময় বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলাম। শুধু রাজনীতি করার কারণে চাকরি ব্যবসা কিছুই করতে পারিনি। আর আমার স্ত্রী নির্বাচন করলে সে দায় কী আমার?’
অভিযোগ রয়েছে আলমগীরের নাম তালিকার ১ নম্বরে প্রস্তাব করার পেছনে সব থেকে বেশি কলকাঠি নেড়েছেন স্কুলটির সহকারী শিক্ষক আবদুস সবুর হাওলাদার।
এ বিষয়ে আবদুস সবুর হাওলাদার বলেন, এখানে কার নাম পাঠানো যাবে তার কোনো ম্যানুয়ালি নিয়ম নেই। এখানে যে কারো নাম প্রস্তাব করা যেতে পারে। একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষিত মানুষ আসবে এটাইতো স্বাভাবিক। তার (আলমগীর হোসেন) কোনো চাওয়া পাওয়া নেই। তার নাম তো প্রস্তাব করা যেতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন আমি সেইভাবে শুধু দাপ্তরিক কাজ করেছি। আমার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ সঠিক নয়।’
ভান্ডারিয়া থানার বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব মনির আকন বলেন, ‘স্কুলটির প্রধান শিক্ষক আমাকে বলেছেন, আমি এখনও কমিটির তালিকা পাঠাইনি। তিনি বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের মানুষকে নানা ধরনের কথা বলছেন।’
ভান্ডারিয়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সভাপতি- সোহেল মঞ্জুর সুমন বলেন, বিএনপি থেকে বহিস্কৃত কোন ব্যক্তি এডহক কমিটির সভাপতি হতে পারবেন না। তাকে তো শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। তাহলে তিনি কীভাবে এডহক কমিটির সভাপতি হবেন ?
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নদমূলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিশির কুমার বড়াল বলেন, ‘আমরা ১১ জনের নাম পেয়েছি। সবার নাম প্রস্তাব করেছি। কেউ বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত কি না সেটা আমার জানা নেই।’
এ ব্যাপারে পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান বলেন, ‘এখানে শত শত স্কুল মাদ্রাসা রয়েছে। সবগুলোর নাম আমার মনে নেই।’
এনডিটিভিবিডি/২৯মে/এএ