ঢাকা , বুধবার, জুলাই ৯, ২০২৫

শুল্ক আলোচনা : যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দরকষাকষিতে ব্যর্থতার অভিযোগ

Jul ০৯, ২০২৫
আন্তর্জাতিক
শুল্ক আলোচনা : যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দরকষাকষিতে ব্যর্থতার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই বার্তা দিয়ে তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের পাঠানো ওই চিঠিতে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের পাশাপাশি তার কারণও ব্যাখ্যা করেছে ওয়াশিংটন।

একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বাজার খোলা এবং শুল্ক ও অশুল্ক নীতিমালাসহ বাণিজ্য বাধা দূর করলে কিছু বিষয় পুনর্বিবেচনার কথাও বলা হয়েছে ওই চিঠিতে।

এদিকে বাংলাদেশি পণ্যে মার্কিন শুল্ক আরোপের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা হিসাব-নিকাশ শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি, বিশেষ করে দেশের বৃহৎ রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকখাতে এর প্রভাব কতটা পড়বে তা নিয়ে চলছে বিশ্লেষণ।

শুল্ক ইস্যুতে আলোচনার জন্য বাণিজ্য উপদেষ্টা নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এখনো ওয়াশিংটন সফরে রয়েছে এবং ৯ জুলাই মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের আরেক দফা আলোচনা হবে বলেও জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।

যদিও পরিস্থিতি বিবেচনায় এই আলোচনা কতটা ফলপ্রসু হবে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে অর্থনীতিবিদদের অনেকের মধ্যে। তারা বলছেন–– চিঠি ইস্যু হয়ে গেছে ও তারা তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে, সেখানে আলোচনা করে আর কী ফলাফল পাওয়া যাবে?

তারা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞ এবং খাত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আরও আলোচনা উচিত ছিল। তবে নন ডিসক্লোজার ক্লজ দেওয়ার কারণে কী আলোচনা হচ্ছে সে সম্পর্কে আমরা জানি না।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দরকষাকষিতে আলোচকদের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বাংলাদেশের দুর্বলতার সুযোগ যুক্তরাষ্ট্র নিচ্ছে বলেও মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চরম নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র নির্ভর করেই যাদের ব্যবসা, তাদের পথে বসাবে এই সিদ্ধান্ত।

গত এপ্রিলে বিভিন্ন দেশের ওপর রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ বা পাল্টা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেয় ট্রাম্প প্রশাসন, যেখানে বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা জানানো হয়।

যা ৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছিল। তবে বিশ্ব অর্থনীতিতে টালমাটাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে এসব শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

নতুন শুল্ক আরোপের কথা জানিয়ে ১৪টি দেশের নেতাদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেসব চিঠি তিনি নিজের ট্রুথ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেছেন।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছেও একটি চিঠি পাঠিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, যেখানে পহেলা অগাস্ট থেকে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের বিষয়টি জানানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, দুঃখজনকভাবে, আমাদের সম্পর্কটি বর্তমানে সমতা থেকে অনেক দূরে। তাই, পহেলা অগাস্ট ২০২৫ থেকে আমরা যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো বাংলাদেশি যে কোনো এবং সব পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবো।

এই শুল্ক এড়াতে যদি ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে পণ্য পাঠানো হয়, সেটিও উচ্চ শুল্কের আওতায় পড়বে।

তবে বাংলাদেশ বা আপনার দেশের কোম্পানিগুলো যদি যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য উৎপাদন বা তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তাদের কোনো শুল্ক দিতে হবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।

এক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্তের পর বাংলাদেশ যদিও শুল্ক হার বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রও পাল্টা হারে শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেবে।

শুল্কের হার বাড়ানো বা কমানোর সিদ্ধান্ত দুই দেশের সম্পর্কের ওপর নির্ভর করবে বলেও জানানো হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই চিঠিতে।

ওয়াশিংটন বলছেন, যদি আপনি এতদিন ধরে বন্ধ থাকা বাণিজ্য বাজার যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খুলতে চান এবং আপনার শুল্ক ও অশুল্ক নীতিমালা এবং বাণিজ্য বাধাগুলো দূর করতে চান, তাহলে আমরা এই চিঠির কিছু অংশ পুনর্বিবেচনা করতে পারি।

যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব দ্য ইউনাইটেড স্টেট ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ, যা ইউএসটিআর নামে পরিচিত, তাদের হিসাবে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল আনুমানিক এক হাজার ৬০ কোটি ডলার।

ওই বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২২০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করা হয়েছে বাংলাদেশে। যার বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৮৪০ কোটি ডলারের মতো।

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব পণ্য রপ্তানি হয় তার মধ্যে রয়েছে–– কৃষিপণ্য যেমন, খাদ্যশস্য, বীজ, সয়াবিন, তুলা, গম ও ভুট্টা। এছাড়া যন্ত্রপাতি এবং লোহা ও ইস্পাতজাত পণ্যও আসে বাংলাদেশে।

আর বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি পণ্যের মধ্যে আছে তৈরি পোশাক, জুতা, টেক্সটাইল সামগ্রী ও কৃষিপণ্য।

অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত অযৌক্তিক শুল্ক বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরও চাপে ফেলবে।

তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য রপ্তানির উল্লেখযোগ্য গন্তব্য হওয়ায় সব পণ্য নিয়েই চিন্তা রয়েছে। তবে পোশাক খাত নিয়েই দুঃশ্চিন্তা সবচেয়ে বেশি।

এই খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কহার বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে আঘাত হানবে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাকের দাম বেড়ে যাবে, যাতে স্থানীয় চাহিদা কমে আমদানি চাহিদাও কমাবে।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলছেন, মার্কিন শুল্ক বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতকে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

তিনি বলেন, ওভারঅল একটা নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট হবে। আর যারা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল তারা অলমোস্ট দেউলিয়া হয়ে যাবে।

তিনি বলছেন, অগাস্টের এক তারিখ পর্যন্ত সময় থাকায় সরকার এখনো আলোচনার কথা বলছে, দেখা যাক কী হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক কমানোর ক্ষেত্রে তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনামের উদাহরণ টানছেন অর্থনীতিবিদদের কেউ কেউ। কারণ দরকষাকষির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২০ শতাংশ শুল্ক চুক্তি করেছে দেশটি।

ভিয়েতনামের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি-রপ্তানির বাজার অনেক বিস্তৃত হলেও অন্তত তাদের সমপরিমাণ শুল্কও যদি বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে পারে তাহলেও আমাদের বাণিজ্য স্বার্থ কিছুটা রক্ষা হতে পারে বলেই মনে করেন অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ- সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

এক্ষেত্রে অবশ্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বা ডব্লিউটিও’র সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে সংস্থাটির নীতিমালায় ব্যত্যয় হওয়ার সুযোগ রয়েছে বলেও মনে করেন ড. রহমান।

ট্যারিফ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রে সঙ্গে আলোচনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রস্তুতি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। তিনি বলছেন, সরকারের কথাবার্তায় গোছালো প্রস্তুতি আছে বলে মনে হয়নি।

এছাড়া তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, যাদের দিয়ে নেগোসিয়েশন করানো হচ্ছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে, তারা কি আসলে সেই যোগ্যতা রাখেন সবাই?

শুল্ক ইস্যুতে আলোচনায় বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিনের নেতৃত্বে ওই দলে রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা।

তেসরা জুলাই ওয়াশিংটনে ইউএসটিআর (যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয়)-এ প্রথম দফার আনুষ্ঠানিক বৈঠকও করেছে তারা।

মঙ্গলবার সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে, নয়ই জুলাইয়ের আলোচনায় দুই দেশের মধ্যে একটি ট্যারিফ ডিল হওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

অবশ্য ট্যারিফ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরকারের আলোচনা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কী প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে এখনো স্পষ্টভাবে কিছুই জানেন না তারা।

ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া তিনমাস সময়ের মধ্যেই ভিয়েতনামসহ কয়েকটি দেশ আলোচনা ও চুক্তি করেছে, আমরা কেনো পারলাম না, উই আর ফেইল্ড সামহোয়্যার (আমরা কোনো যায়গায় ব্যর্থ হয়েছি)।

বোয়িং কেনাসহ যেসব প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রকে দেওয়া হয়েছে যেগুলো খুব একটা কার্যকর নয় বলেই মনে করেন মাহমুদ।

তিনি বলছেন, দিজ আর নট সল্যুশন (এগুলো সমাধান নয়)। তাদের পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম, রেলওয়ে ব্যবস্থার উন্নয়নের মতো ক্ষেত্রগুলোতে আসার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে।

তিনি মনে করে, প্রায় ১৫০০ কোট টাকার ট্যাক্স যদি ইমপরট্যান্ট হয় তাহলে এতটা হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই।

এক্ষেত্রে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্টে নন ডিসক্লোজার ক্লজটি জুড়ে দেওয়াকেই সমস্যা হিসেবে দেখছেন। যাতে অর্থনীতিবিদ কিংবা ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গেও এ নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা করেনি সরকার।

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলছেন, গত জুনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি নন-ডিসক্লোজিং অ্যাগ্রিমেন্ট বা এনডিএ সই হয়। গোপনীয়তার প্রকৃতির কারণে এই চুক্তির বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি বলেও তিনি জানান।

আলোচনা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা যাচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, নন ডিসক্লোজার থাকলেও স্টেক হোলডারদের নিয়ে একটা টিম করে আলোচনা করা যেতো, এটা অবশ্য খুবই জটিল বিষয়।

তিনি বলছেন, তিন মাসের আলোচনার পর বাড়তি আর কী প্রস্তাব বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে দিতে পারে তা পরিষ্কার নয় কারণ তারা তো কোনো বিষয়ই আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেন নাই।

তবে ভিয়েতনামের থেকেও বাড়তি ১৫ শতাংশ শুল্ক যদি বাংলাদেশকে দিতে হয় তাহলে তা বাংলাদেশের জন্য একটা বিপর্যয়ের কারণ হবে বলে জানান রহমান।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দরকষাকষি নিয়ে খুব একটা আশাবাদী নন অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। তার মতে, আলোচনা চলতে পারে, তবে বাংলাদেশকে এখন ভবিষ্যতের জন্যও প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, ৩৫ শতাংশ সামাল দেব কীভাবে এই চিন্তাও করা উচিত বাংলাদেশের। পোশাক খাতের জন্য নতুন বাজার খোঁজার পাশাপাশি বায়ারদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করার পরামর্শ তার।

তিনি বলছেন, ট্যারিফ নিয়ে বায়ারদের সঙ্গে কতটা প্রাইস নেগোসিয়েশন করা যায় সেই চেষ্টাও সংগঠিত ভাবে শুরু করা উচিত। পুরো চাপ বাংলাদেশকে নিতে হলে আমাদের ফ্যাক্টরিগুলো চলবে কীভাবে?

ট্যারিফ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রও চাপের মুখে পড়বে বলেই মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। কারণ বাংলাদেশের মতো স্বল্প খরচে পণ্য উৎপাদনের সুযোগ তারা খুব কম দেশেই পাবে।

জাহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ তো দ্বিতীয় বৃহৎ সরবরাহকারী আমেরিকান মার্কেটে, সেখানে বাংলাদেশ থেকে যদি বায়াররা না কিনতে চায় তারা বিকল্প যাবে কোথায়।

ট্রান্সশিপমেন্ট ইস্যু থাকায় ভিয়েতনামও এক্ষেত্রে খুব একটা সুবিধা পাবে বলে মনে করেন না ড. জাহিদ হোসেন।

এক্ষেত্রে শুধু সরকারের দিকে তাকিয়ে না থেকে ব্যবসায়িদেরও উচিত বড় বায়ারদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা। একক দেশের ওপর নির্ভর না করে ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে এক্সপোর্ট ডাইভারসিফিকেশনের কথা বলছেন অর্থনীতিবিদরা।

তারা বলছেন, আপাতত আলোচনা করে কিছু একটা সমাধান করা গেলেও ভবিষ্যতে ইউরোপের বাজারেও এর প্রভাব বিদ্যমান থাকবে।

তাই বন্দর ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নের দীর্ঘমেয়াদী উপায়গুলো নিয়েও বাংলাদেশকে কাজ শুরুর কথা বলছেন অর্থনীতিবিদরা।

এনডিটিভিবিডি/০৯জুলাই/এএ