ঢাকা , বৃহস্পতিবার, মে ১, ২০২৫

অবিশ্বাস্যে মিরাজে ৩ দিনেই জিতল বাংলাদেশ

এপ্রিল ৩০, ২০২৫
খেলাধুলা
অবিশ্বাস্যে মিরাজে ৩ দিনেই জিতল বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক: মেহেদী হাসান মিরাজের সেঞ্চুরি এবং পাঁচ উইকেটের ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ইনিংস এবং ১০৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে সিরিজে ১-১ ব্যবধানে সমতা এনেছে বাংলাদেশ। ম্যাচের তৃতীয় দিন শুরুতে ১০৪ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেন মিরাজ, পরে বল হাতে ৩২ রান খরচায় পাঁচ উইকেট নেন তিনি। সোহাগ গাজী এবং সাকিব আল হাসানের পর তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে একই টেস্টে সেঞ্চুরি এবং পাঁচ উইকেট পেলেন মিরাজ। তার দারুণ বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসে ২২৭ রানে অল আউট হওয়া জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে করে ১১১ রান। এর আগে মিরাজের সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে করে ৪৪৪ রান।

দিনের তৃতীয় ও শেষ সেশনে বোলিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারে আরও একটি উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। দিনে প্রথমবার বোলিংয়ে এসে শন উইলিয়ামসকে ফেরান নাঈম হাসান। ডানহাতি অফ স্পিনারের অফ স্টাম্পে পড়ে টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে এজ হয়ে স্লিপে সাদমানকে ক্যাচ দেন ৭ রান করা অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর বেন কারানকে সঙ্গে নিয়ে জুটি গড়ে তোলেন ক্রেইগ আরভিন। এই জুটি ভাঙেন মিরাজ।

ডানহাতি অফ স্পিনারের ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে ডাউন দ্য উইকেটে এসে স্লগ করতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক। আরভিনের ব্যাট থেকে আসে ৫৬ বলে ২৫ রান। একই ওভারের শেষ বলে ওয়েসলি মাধেভেরেকেও আউট করেন মিরাজ। ডানহাতি অফ স্পিনারের বলে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন রানের খাতা খুলতে না পারা মাধেভেরে। তাইজুলের মতো একই ওভারে দুই উইকেট নেন মিরাজ।

এরপর তাফাজায়া সিগাকেও ফেরান মিরাজ। ডানহাতি এই স্পিনারের ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে মিড অফের উপর দিয়ে খেলার চেষ্টায় তাইজুলকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ১০ রান করা মাসাকাদজা। পরের ওভারে বেন কারানকে ফিরিয়ে ইনিংসে নিজের পাঁচ উইকেট তুলে নেন মিরাজ। তার অফ স্টাম্পে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে এজ হয়ে উইকেটের পেছনে জাকের আলীকে ক্যাচ দিয়েছেন ৪৬ রানের ইনিংস খেলা কারান। এরপর অলআউট হতে সময় নেয়নি জিম্বাবুয়ে। ১১১ রানেই তাদের আটকায় বাংলাদেশ।

এর আগে সাত উইকেটে ২৯১ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে বাংলাদেশ। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার মিরাজ এবং তাইজুলে দল তিনশ পার করে। ৮৯.২ ওভারে তাইজুলের চারে তিনশ পার করে বাংলাদেশ। এই দুজনের ৬৩ রানের জুটি ভাঙেন ভিনসেন্ট মাসেকেসা। তাইজুলকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন তিনি। ৪৫ বলে ২০ রানে বিদায় নেন তাইজুল। ৯৮.৪ ওভারে দলীয় ৩৫০ রান করে বাংলাদেশ। পরের ওভারেই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মিরাজ।

তাইজুল ফিরলে মিরাজের সঙ্গে দলের হাল ধরেন তানজিম হাসান সাকিব। মিরাজের সঙ্গে ইতিবাচক ভঙ্গিমায় ব্যাট চালাতে থাকেন তিনি। এই দুজনের ব্যাটে ১১৩ ওভারে চারশ রান স্পর্শ করে বাংলাদেশ। মিরাজ-তানজিমের নবম উইকেট জুটিও পঞ্চাশ রান ছাড়িয়ে যায়। ১১৪ ওভারে আট উইকেটে ৪০৪ রান করে মধ্যাহ্নভোজ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। প্রথম সেশনে ২৭ ওভার হয়। ১১৩ রান করার পাশাপাশি তাইজুলের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। 

মিরাজ-তানজিম নবম উইকেট জুটিতে তোলেন ৯৬ রান। টেস্ট অভিষেকে তানজিমের ব্যাটে আসে ৮০ বলে ৪১ রান। তাকে ফেরান ওয়েসলি মাধেভেরে। এই স্পিনারের বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ব্যাটে-বলে এক করতে পারেননি তানজিম। শর্টে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নিতে হয় তাকে। এর একটু পরই সেঞ্চুরি তুলে নেন মিরাজ। ১৪৩ বলে সেঞ্চুরি আসে মিরাজের। বাংলাদেশের লিডও দুইশ রান পার করে।

শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হন মিরাজ। মাসেকেসার বলে ডাউন দ্যা উইকেটে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন এই অলরাউন্ডার। ফেরার আগে ১৬২ বলে ১০৪ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন তিনি।