" />
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি- জামায়াতের মহাসমাবেশ নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের বরাতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্ত যে অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন, আজকের এই সাংবাদিক সমাবেশ থেকে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। শ্যামল দত্তের এ ধরনের বক্তব্য হলুদ সাংবাদিকতার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ।
একচোখা এবং দলদাস সাংবাদিক নেতা শ্যামল দত্ত সেদিনের কর্তব্যরত সাংবাদিকদের উপর সরকার দলীয় সন্ত্রাসী এবং পুলিশী হামলার ঘটনাকে বিরোধী দলের উপর চাপানোর হীন উদ্দেশ্য একটি প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে এবং হামলার দায় বিএনপি- জামায়াতের উপর চাপানোর ব্যার্থ চেষ্টা করেন।তিনি বলেন, “এই হামলা যে অত্যন্ত পরিকল্পিত ছিল তা মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও জানতেন ,২৮ তারিখ যে সহিংসতা হবে বিএনপি’র পক্ষ থেকে এ ধরনের আভাস দেওয়া হয়েছিল।
বিএনপি -জামাতের সহিংসতার খবর পিটার হাসদের কাছেও ছিল। দশ দিন আগে পিটার হাসের সঙ্গে এক নৈশভোজে কথোপকথনে বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি ।ফলে যারা বলে এই কর্মসূচিতে হামলা আকস্মিকভাবে হয়েছে এটা ভুল।”শ্যামল দত্ত ওই প্রতিবাদ সমাবেশে এমন ভাবে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন যাতে যেকোনো মানুষের কাছে মনে হতে পারে বিএনপি নেতৃবৃন্দ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে অবহিত করেই ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশে সহিংসতা করেছে। এমন নির্জলা মিথ্যাচার করা শ্যামল দত্তদের পক্ষেই সম্ভব। এরাই ওয়ান ইলেভেনের সময় মিথ্যা তথ্য দিয়ে মইনুদ্দিন- ফখরুদ্দিনদের ক্ষমতা গ্রহণের পথ প্রশস্ত করেছিলেন।
২০১৪ সালের বিনা ভোটের আওয়ামী সরকারকে বৈধতা দিয়েছিলেন।২০১৫ সালে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে সারা দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করেছেন এবং ২০১৮ সালের নিশি রাতের নির্বাচনকে বৈধতা দিয়েছিলেন। এখন সময় এসেছে এই হলুদ সাংবাদিকতার লাগাম টেনে ধরার এবং প্রকৃত সত্য উদঘাটনের।
সাংবাদিক সমাজ মনে করে, বর্তমান সরকার গত ১৫ বছর ধরে যেখানে স্বাধীন সাংবাদিকতার টুটি চেপে ধরে রেখেছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করেছে, সাগর – রুনিসহ ৬০ জন সাংবাদিককে হত্যা করেছে, আইসিটি, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট এবং সর্বশেষ সাইবার সিকিউরিটি অ্যক্ট করে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মিথ্যা মামলা দিয়ে বিনা বিচারে বছরের পর বছর সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষকে কারাগারে রেখেছে তার প্রতিবাদ না করে সরকারকে অতিমাত্রায় কর্তৃতবাদী হয়ে ওঠার পথকে প্রসারিত করছেন।
গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির স্মরণকালের সর্ববৃহৎ মহাসমাবেশ যখন শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখনই সরকারের এজেন্টরা সাদা পোশাকে এবং যুবলীগ- ছাত্রলীগ প্রধান বিচারপতির বাসভবন, সাংবাদিক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর হামলা চালিয়ে পরিবেশ ঘোলাটে করে তোলে। পুলিশ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের যৌথ হামলায় প্রবীণ সাংবাদিক নেতা রফিক ভূইয়া, পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজ এবং যুবদল নেতা শামীম মোল্লা ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আহত হন অর্ধশত সাংবাদিক ।
সেই হাঙ্গামার সুযোগে দাঙ্গা পুলিশ নির্বিচারে সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারগাস নিক্ষেপ করে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ পন্ড করে দেয়। তারা সমাবেশের মাইকের তার বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে নেতৃবৃন্দের বক্তব্য প্রচারে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হ্যান্ড মাইক নিয়ে সরকারের হীন চক্রান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।তিনি ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর দেশব্যাপী সকাল সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেন। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ গত ২৮ অক্টোবর সমাবেশের দিনে সরকারি ছত্রছায়ায় পেশাদার সাংবাদিকদের উপর হামলা ও নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে, এবং গত ২৯ অক্টোবর এর প্রতিবাদে ডিইউজে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে।