" />
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ
গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড গোয়ালবাথান এলাকায় আলী নগর মোসলেম মিশন এতিমখানা ও আশরাফুল মাদ্রাসার ওয়াকফা করা সম্পত্তি জবর দখল করে ভোগ করার অভিযোগ উঠেছে ওই মাদ্রাসার পরিচালক মোহাম্মদ আলী ওরফে চাঁন মিয়া নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। স্থানীয় যুবসমাজ ও মাদ্রাসার সাথে জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে ওই মাদ্রাসার জমিটি পুনঃউদ্ধার করে নতুন মাদ্রাসা তৈরির চেষ্টা করলেও তারা মিথ্যে মামলা, হামলার শিকার হন বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীদের নিয়ে জুয়েল হোসেন (৩৫) নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রবিবার সকালে কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
স্থানীয়দের ভাষ্য ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কালিয়াকৈর পৌরসভার গোয়ালবাথান এলাকায় দুই যুগ আগে স্থানীয় লোকজন একটি সমিতির মাধ্যমে গোয়ালবাথান মৌজায় ২৪৭ খতিয়ানের এস এ ৪০৯ দাগে পাঁচ শতাংশ জমি ক্রয় করে আলী নগর মোসলেম মিশন এতিমখানা ও আশরাফুল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। মাদ্রাসাটি পরিচালনার জন্য সমিতির পক্ষ থেকে অভিযুক্ত মোহাম্মদ আলী চাঁন মিয়াকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। সেসময় তিনি ছিলেন ওই এলাকায় উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর ধীরের ধীরে সেখানে শুরু হয় নানা অনিয়ম, অপকর্ম। সরকারি, বেসরকারি অনুদান আত্মসাতসহ মাদ্রাসার পরিচালক অভিযুক্ত মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বলাৎকারের অভিযোগ উঠে একাধিকবার। পরে একপর্যায়ে মাদ্রাসা বন্ধ হয়ে যায়। পরে মাদ্রাসাটি ভেঙে মালামাল সরিয়ে ফেলে মোহাম্মদ আলী। এরপর দীর্ঘদিন জমিটি ফাঁকা পড়ে থাকলে সেখানে তিনি দোকানপাট নির্মাণ করে ভাড়া আদায় করেন। এসব বিষয়ে স্থানীয় লোকজন প্রতিবাদ করলে তার উপর মিথ্যে মামলা দায়েরসহ নানা ভাবে হয়রানি করেন মোহাম্মদ আলী।
ওই এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক জানান, এই মাদ্রাসার জমি ওয়াকফা করা। আমরা এলাকায় ঘুরেঘুরে অনুদান উঠিয়েছি। সরকার থেকেও অনুদান দিতো। আমাদের সন্তানদের সেখানে পড়িয়েছি। আমাদের সকলের সহযোগিতায় মাদ্রাসাটি স্থাপিত হয়েছিল। কিন্তু যাকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম তিনি কারচুপি ও নানা অপকর্ম করায় মাদ্রাসা বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ওয়াকফা করা মাদ্রাসার জমি মোহাম্মদ আলী চাঁন মিয়া দখল করে খাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা হাফিজ উদ্দিন মাস্টার, জুয়েল হোসেন, সাত্তার হোসেন জানান, গ্রামের সকলেই জানে এটি মাদ্রাসার ওয়াকফা করা সম্পত্তি। যার একটি দলিল আছে। একটি সমিতির মাধ্যমে জমিটি ক্রয়ের পর মাদ্রাসার নামে ওয়াকফা করা হয়েছে। সেই ওয়াকফা দলিলে মাদ্রাসার পরিচালক মোহাম্মদ আলী চাঁন মিয়া নিজে স্বাক্ষর করেছেন। কিন্তু বর্তমানে মাদ্রাসা না থাকায় ওই জমি তিনি নিজের দাবী করে ভোগ করছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোহাম্মদ আলী ওরফে চাঁন মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তার বক্তব্যে জমিটি মাদ্রাসার নামে ওয়াকফা করার কথা স্বীকার করে বলেন, তখন মাদ্রাসা ছিল এখন মাদ্রাসা নেই। আমার জমি আমি ভোগ করছি তাতে কারো কোন সমস্যা থাকলে আমার কিছু আসে যায় না।
তবে এ ব্যাপারে কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, ওয়াকফা করা জমি কোন ব্যক্তি জবর দখল বা ভোগ করার সুযোগ নেই। বিষয়টি সঠিক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।