" />
স্প্যানিশ অভিনেত্রী আনা ওবরেগনের (৬৮) ছেলে অ্যালেস ২৭ বছর বয়সে ২০২০ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অ্যালেসের শেষ ইচ্ছে ছিল বাবা হওয়ার। ছেলের শেষ ইচ্ছে পূরণ করতে ছেলের শুক্রাণুতে সারোগেসির মাধ্যমে “মা” হয়েছেন আনা ওবরেগন। ছেলের শুক্রাণু আর নিজের ডিম্বাণু দিয়ে গঠিত ভ্রুণ যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় বসবাসকারী কিউবান বংশোদ্ভূত এক গর্ভে (সারোগেসি) সেই সন্তান বেড়ে উঠেছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন ও বিবিসি।
এক সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্রে সারোগেসির মাধ্যমে এক মেয়ের “মা” হওয়ার কথা বলে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন স্প্যানিশ সিটকম তারকা আনা ওবরেগন; এবার তিনি জানালেন- এই সন্তানের বাবা আসলে তার প্রয়াত ছেলে।
বিবিসি জানিয়েছে, মৃত্যুর আগে ছেলের ‘বলে যাওয়া’ শেষ ইচ্ছে পূরণ করতেই অভিনেত্রী এমন সিদ্ধান্ত নেন; যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় বসবাসকারী কিউবান বংশোদ্ভূত এক নারী সারোগেসির মাধ্যমে এই সন্তানের জন্ম দেন।
একজন নারীর গর্ভে অন্য দম্পতির সন্তান ধারণের পদ্ধতিকে ‘সারোগেসি’ বলে। ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন পদ্ধতিতে নারীদেহ থেকে ডিম্বাণু ও পুরুষ দেহের শুক্রাণু দেহের বাইরে টেস্টটিউবে নিষিক্ত করে তা সারোগেট মায়ের গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়।
স্প্যানিশ অভিনেত্রী আনা ওবরেগনের বিষয়টি সামনে আসার পর “লেট্রাস” নামের অন্য একটি ম্যাগাজিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় বসবাসকারী কিউবান বংশোদ্ভূত এক নারীর ছবি ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ করে। ওই নারীই ছিলেন অ্যালেস-ওবরেগনের সন্তানের সারোগেট মাদার। অর্থাৎ সন্তান নিতে ওই নারীর গর্ভ ভাড়া নিয়েছিলেন ওবরেগন।
সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান জন্মদানের এমন ঘটনা সামনে আসার পর এই পদ্ধতিতে সন্তান নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে স্পেনে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সারোগেসির আইনি ও নৈতিক দিক নিয়ে বিতর্ক চলছে। স্পেনে সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান নেওয়া আইনিভাবে স্বীকৃত নয়।
হোলা ম্যাগাজিনকে আনা ওবরেগন বলেন, “এই মেয়েটি আমার মেয়ে নয়, আমার নাতনি। সে অ্যালেসের মেয়ে এবং সে যখন বড় হবে তখন আমি তাকে বলব যে তার বাবা একজন নায়ক ছিলেন।”
গত ২০ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামিতে আনা স্যান্দ্রা লেকুইও ওবরেগনের জন্ম হয়। সে হিসেবে জন্মসূত্রে সে যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টধারী নাগরিক হবে। স্পেনে যাওয়ার আগে মিয়ামিতে স্পেনের কনস্যুলেটের মাধ্যমে তাকে নথিভুক্ত করা হবে বলে হোলা ম্যাগাজিনকে জানান আনা ওবরেগন।
সারোগেসি নিয়ে বিতর্ককে “অযৌক্তিক” উল্লেখ করে আনা ওবরেগন বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান জন্মদান খুবই স্বাভাবিক। সেখানে স্পেনের মতো এমন বিতর্ক নেই। বিশ্বের অনেক দেশেই এই পদ্ধতি বৈধ।”
স্প্যানিশ আইনে সারোগেসি অবৈধ। এখন সারোগেসি পদ্ধতিতে জন্ম নেওয়া কোনো শিশুকে দেশে আনা যাবে কি-না সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
তবে অভিনেত্রী বলছেন, “তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী ওই সন্তানের স্বীকৃত মা। আর স্পেনে সারোগেসি অবৈধ হলেও অন্য দেশে সারোগেসির মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশু দত্তক নেওয়া বৈধ।”
স্পেনের আইন, সারোগেসিকে “নারীর ওপর নিপীড়ন” হিসেবে দেখে। তবে সবকিছুর শেষে নৈতিক প্রশ্নটিই বারবার আলোচনায় আনছেন সমালোচকেরা।