" />
বলধা গার্ডেন ঢাকা শহরের ওয়ারী এলাকায় অবস্থিত একটি বোটানিক্যাল গার্ডেন। এই উদ্যানে প্রচুর দুর্লভ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। ভাওয়াল জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী উনিশশো নয় সালে বাগানটি প্রতিষ্ঠা করেন।তিন পয়েন্ট আটত্রিশ একর জায়গার ওপর এই উদ্যান নির্মাণ করা হয়েছে। নরেন্দ্র নারায়ণ এখানে একটি পারিবারিক জাদুঘরও প্রতিষ্ঠা করেন।
নরেন্দ্র নারায়ণ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে দুর্লভ প্রজাতির গাছপালা এনে বাগানটি ক্রমাগত সমৃদ্ধ করেছেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর বাগানের উন্নয়ন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থা কিছুকাল চলার পর ১৯৬২ সালে এটি সাবেক পূর্ব পাকিস্তান সরকারের কাছে হস্তান্তরিত করা হয় এবং বন বিভাগের ওপর সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বর্তায়।১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বন বিভাগ নব-উদ্যোগে উদ্যানের উন্নয়ন শুরু করে। ফলে বাগানের হারানো গৌরব অনেকটা পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হয়। অতঃপর দুটি নতুন গ্রিনহাউস নির্মাণসহ সর্বসাধারণের জন্য বাগানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাও গড়ে ওঠে। এ প্রসঙ্গে একজন কর্মকর্তা বলেন ,
বলধা গার্ডেন দুটি অংশে বিভক্ত। একটি অংশের নাম সাইকী এবং অন্যটি সিবলী। সাইকী অর্থ আত্মা ও সিবলী অর্থ প্রকৃতির দেবী। দুটি শব্দই গ্রিক পৌরাণিক শব্দ।
সাইকী অংশের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে নীল, লাল, সাদা, হলুদ, জাতের শাপলায় ভরা অনেকগুলো শাপলা হাউস, বিরল প্রজাতির দেশি বিদেশি ক্যাকটাস, অর্কিড, এনথুরিয়াম, ভূজ্জপত্র গাছ, বিচিত্র বকুল, আমাজান লিলি ও সুড়ঙ্গসহ একটি ছায়াতর ঘর।
সিবলী অংশের মূল আকর্ষণ হচ্ছে শঙ্খনদ, পুকুর, ক্যামেলিয়া, অশোক, আফ্রিকান টিউলিপস। এখানে আরো আছে সূর্যঘড়ি, জয় হাউস। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাগানটি পরিদর্শনে এসেছিলেন এবং জাপান থেকে সংগৃহীত ক্যামেলিয়া জেপনিকা , ফুলের অপূর্ব সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তাঁর বিখ্যাত ‘ক্যামেলিয়া’ কবিতাটি রচনা করেন। বাগানের অন্যতম আর্কষণ ‘সেঞ্চুরি প্লান্ট’।
ফুল ফোটে শতবর্ষে একবার। এখানে আরো আছে বাওবাব গাছ। মধ্য আফ্রিকার আদিবাসীরা মিসরের ফারাওদের অনেক আগে থেকেই এই গাছের খোঁড়লে মৃতদেহ রেখে মমি বানাত। বর্তমানে এ বাগানের মোট আটস প্রজাতির প্রায় আঠারো হাজার উদ্ভিদ আছে। প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে দুপুর বারোটা এবং দুপুর দুইটা থেকে বিকেল পাচ টা পর্যন্ত এই উদ্যান দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে।