শাহীন রহমান,পাবনা প্রতিনিধি
হতদরিদ্র ৭ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থী শ্রুতি লেখকের সহায়তায় পাবনার মানব কল্যাণ ট্রাস্টের সার্বিক তত্বাবধানে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।
চোখের আলো না থাকলেও মনের আলো আর শক্তিতে তারা এগিয়ে যাচ্ছে পড়ালেখায়। কিন্তু তাদের জন্য নেই পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা।
পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা হলো; গাজীপুরের রজিম উদ্দিনের ছেলে রোমান মিয়া, পাবনার সাঁথিয়ার ওয়াজেদ আলীর ছেলে শোভন মোল্লা, পাবনা সদরের দোগাছির চাঁদ আলীর ছেলে আল আমিন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাবলাবনা গ্রামের আনছার আলীর ছেলে মোশাররফ হোসেন, সাঁথিয়ার আব্দুস সাত্তার মোল্লার ছেলে আব্দুস সবুর, সদরের চরতারাপুরের ইছাহাক প্রামানিকের ছেলে শাকিল প্রামানিক ও জয়পুরহাটের ফরিদ হোসেনের ছেলে রিয়াদ হোসেন।
পরীক্ষার্থীরা পাবনার দোগাছি স্কুল এন্ড কলেজ, পাবনা সরকারি কলেজ, শহীদ এম মনসুর আলী কলেজ ও পাবনা ইসলামিয়া কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।
পরীক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা পাবনার সিংগাস্থ মানব কল্যাণ ট্রাস্টের আশ্রয়ে থেকে বিনা খরচে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগগ্রহণ করেছে। তাদের ইচ্ছে ভবিষ্যতে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে সমাজের অবহেলিত সকল বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের শিক্ষিত করে তোলার পাশাপাশি সমাজে নানা ক্ষেত্রে অবদান রাখা।
ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক ড. মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, অন্ধ শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার জন্য ব্রেইল পদ্ধতি প্রয়োজন। অথচ দেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ সুযোগ নেই। পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন শ্রুতি লেখকের। দরিদ্র এসকল প্রতিবন্ধীদের শ্রুতি লেখকের সম্মানী তো দূরের কথা লেখাপড়া করার নুন্যতম আর্থিক ব্যয় নির্বাহ করার সক্ষমতা নেই। তারপরও থেমে থাকেনি এসব সংগ্রামী বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে মানব কল্যাণ ট্রাস্ট। সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজন আর্থিক সহায়তা।
ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবুল হোসেন বলেন, এই ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের বিভিন্ন জেলার বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের এখানে রেখে পড়ালেখা করানো হচ্ছে। প্রতি বছর এসএসসি, এইচএসসি, অনার্স, মাস্টার্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে আমাদের শিক্ষার্থীরা। তারা সুনামের সাথে সাফল্যজনক ফলাফল করছে। তাদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতিতে কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থাও রয়েছে। তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠান যদি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সারাদেশের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের সর্বোৎকৃষ্ট শিক্ষালয় হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
Post Views: ১৩