" /> কেএনএফের গুলিতে নিহত নাজিমের লাশ রংপুরে দাফন – নাগরিক দৃষ্টি টেলিভিশন
শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন

কেএনএফের গুলিতে নিহত নাজিমের লাশ রংপুরে দাফন

pic 14

1 / 100

রংপুর ব্যুরো: চামেলী বেগমের স্বামী সেনা ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিনের সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয় শনিবার। রোববার বিকেলে আসে তাঁর মৃত্যুর খবর।

এ খবরে চামেলীর সব কিছুই ছেয়ে গেছে ঘোর অন্ধকারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়–য়া নাইমুজ্জামান চঞ্চল ও এইচএসসি পড়–য়া ছেলে আব্দুল্লাহ আল নোমান নিরবের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্ক। সে ভাবনা দুমড়ে মুচড়ে দিচ্ছে চামেলীকে। বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন তিনি। জ্ঞান ফিরলেই বিলাপ করছিলেন, ‘ওয়(স্বামী) যে কয়ছলো রমজানোত বাড়িত আসবে। ভালো মন্দ আন্দি খিলাইম। তাক আগোতে কেন আসিল, কথা কেন কওছে না। কি হইছে, উঠে না কেন? ওমাক কি মারি ফেলাইছে। মোর ছাওয়াগুলোর কি হইবে বলেই ফের মুর্ছা যান।
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি সেনাবাহিনী টহল দলের ওপর কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএফ) গুলিতে নিহত নাজিম উদ্দিনের লাশ গতকাল মঙ্গলাবার সকাল সাড়ে ১১টায় রংপুরের মর্ডাণ এলাকার আশরতপুর কোর্টপাড়ার নিজ বাড়ি নিয়ে আসলে এমনই চিত্র দেখা যায়।


এলাকাবাসী ও সেনাবাহিনীরা জানান, গত রোববার দুপুর ১টার দিকে সেনাবাহিনীর তত্ববধায়নে জাতীয় শিশু ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় মা ও শিশুদের বিনামুল্যে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার উদ্দেশ্যে যাওয়া দলের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সেনা দলের সদস্য ছিল নাজিম উদ্দিন। এ সময় কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির অতর্কিত গুলি বর্ষণে ঘটনাস্থলেই নিহত হন সেনাবাহিনীর মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন। এ সময় আহত হন আরও দুজন সেনা। গতকাল সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে হেলিকপ্টার যোগে নিজাম উদ্দিনের মরদেহ রংপুর ক্যান্টমেন্টে নিয়ে আসা হয়। এরপর সেখান থেকে সেনা বহরে করে তাঁর লাশ নিজ বাড়িতে নেওয়া হয়।
নাজিমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পুরো এলাকায় কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে। শোকের মাতম চলছে। পাড়া, প্রতিবেশীরা বির্মূষ হয়ে ভিড় করছেন নাজিমকে এক মর্হুতু দেখার জন্য।


নাজিম উদ্দিনের ছোট ভাই আজিম উদ্দিন বলেন, ১৯৯১ সালে ভাই সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। দুই মাস আগেও ছুটিতে এসেছিলেন। শনিবার ভাবির সঙ্গে কথা হয়েছে এবার রমজানে বাড়িতে আসবেন। কিন্তু ভাই যে এভাবে আসবে তা আমরা কেউ আশা করিনি। ভাইকে যারা গুলি করেছে, তাদের ধরা হোক সঠিক বিচার করা হোক।
প্রতিবেশি শাহাজান বলেন, নাজিম অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন। ছুটিতে বাড়িতে এলে আমাদের খোঁজ খবর নিতেন। তাঁর এভাবে চলে যাওয়া মেনে নেওয়া যায় না। এখন নাজিমের স্ত্রী-সন্তানের কি হবে। আল্লাহ যেন তাদের প্রতি সহায় হোন।
রংপুর সিটি করপোশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, নাজিম উদ্দিন শহীদ হয়েছে। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কাছে আমার বিশেষ ভাবে অনুরোধ থাকবে নাজিম উদ্দিনের সন্তানদের লেখাপড়া সহায়তা করা ও এতিম পরিবারটিকে রাষ্ট্রীয় যে সুযোগ সুবিধা আছে তা নিশ্চিত করা।
বাবলুর রহমান বারী,রংপুর ব্যুরো


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা