" /> ক্যান্সার প্রতিরোধে ভ্যাকসিন তৈরির উদ্যোগ নেয়াসহ গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে: বিএসএমএমইউর উপাচার্য – নাগরিক দৃষ্টি টেলিভিশন
শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ১২:২৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ
ব্রাজিলে ফিরছেন বলসনারো ঈদের আগে ও পরে ৩ দিন সাধারণ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান ফেরিতে পারাপার বন্ধ থাকবে অটিজমে বিশেষ অবদান রাখায় সম্মাননা পাচ্ছে ১৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান প্রথম আলোর মিথ্যাচার এবং ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে যুব মহিলা লীগের বিক্ষোভ সমাবেশ জিয়াউর রহমান অনুপ্রবেশকারী হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন : মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী এবার আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশের মিশনে বাংলাদেশ বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার মামলায় অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন ৭ মে বার্সেলোনার প্রস্তাবের অপেক্ষায় মেসি : রিপোর্ট নীলফামারীতে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ১৫ নারী পেলেন সেলাই মেশিন বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ

ক্যান্সার প্রতিরোধে ভ্যাকসিন তৈরির উদ্যোগ নেয়াসহ গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে: বিএসএমএমইউর উপাচার্য

WhatsApp Image 2023 02 15 at 19.12.12 min

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিশ্বখ্যাত স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নিয়ে বিএসএমএমইউর উদ্যোগে ক্যান্সার প্রতিরোধে ভ্যাকসিন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে।

একই সাথে যাতে করে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায় সে বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম আরো জোরদার করতে হবে। তিনি বলেন, স্টেমসেল থেরাপি নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন বাস্তবায়ন করতে হবে।

বুধবার আন্তর্জাতিক শিশু ক্যান্সার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসএমএমইউর উপাচার্য এসব কথা বলেন।

বিএসএমএমইউর উপাচার্য শারফুদ্দীন আহমেদ বলেন, বিএসএমএমইউর শিশু হেমাটোলজি অনকোলজি বিভাগের চিকিৎসকরা ৩১ শয্যার ওয়ার্ড নিয়ে ১০ হাজার শিশু রোগীকে সেবা দিয়েছেন, যা প্রশংসার দাবি রাখে।

বুধবার বিএসএমএমইউয়ে আন্তর্জাতিক শিশু ক্যান্সার দিবস-২০২৩ পালিত হয়েছে। সকাল নয়টার দিকে বিএসএমএমইউর ই-ব্লকে দ্বিতীয় তলায় মিলনায়তনে শিশু হেমাটোলজি বিভাগের উদ্যোগে “বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন ইন চিলড্রেন এন্ড ক্যান্সার ভ্যাকসিন ইন চাইল্ডহুড ম্যালিগন্যান্সি” শীর্ষক বৈজ্ঞানিক সেমিনার ও ডি- ব্লকের সামনে সচেতনতামূলক শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে বলা হয়, আজ ১৫ ফেব্রুয়ারী বিশ্ব শিশু ক্যান্সার দিবস। প্রতি বছরই ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছেই। শিশুদের সাধারনত ব্লাড ক্যান্সার বা লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার হার অন্যান্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়া থেকে বেশি। তবে এছাড়াও কিডনির টিউমার, লিভারের টিউমার, চোখের টিউমার, ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত হওয়া শিশুর সংখ্যাও কম নয়। ওয়ার্ল্ড চাইল্ড ক্যান্সার এর হিসাব মতে বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় চার লাখ শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। দ্রুততম সময়ে সনাক্ত করা গেলে ও উন্নত চিকিৎসা পেলে শতকরা ৭০ ভাগ রোগী সেরে উঠতে পারে। উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে উন্নত দেশ গুলোতে ক্যান্সার থেকে সেরে উঠা রোগীর হার শতকরা প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ। তাই আজকের আলোচনায় উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশনএবং ক্যান্সার ভ্যাক্সিন এর ব্যবহার এবং এর উপকারিতা নিয়ে বিষদ আলোচনা করা হয়।

বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশনবা স্টেম সেল প্রতিস্থাপন হল একটি প্রক্রিয়া যা ক্ষতিগ্রস্থ’ বা রোগাগ্রস্থ’ বোন ম্যারো, রক্ত সৃষ্টিকারী স্বাস্থ’্যকর স্টেম সেল দিয়ে প্রতিস্থ’াপন করা হয়। বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন দুই ধরনের ঃ অটোলোগাস ট্রান্সপ্ল্যান্ট ( নিজস্ব শরীর থেকে স্টেম সেল সংগ্রহ করে) এবং অ্যালোজেনিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট (দাতার থেকে স্টেম সেল সংগ্রহ করা হয়)। ফিরে আসা লিম্ফোসাইটিক লিউকেমিয়া, গুরুতর লিম্ফোসাইটিক লিউকেমিয়া, রিফ্র্যাক্টরি হেমাটোলজিকাল ম্যালিগনেন্সি, নিউরোব্লাস্টোমা সহ আরো কিছু গুরুতর ক্যান্সারের চিকিৎসায় বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন বা স্টেম সেল প্রতিস্থাপন একটি কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি। উন্নত বিশ্বে এই পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে চিকিৎসা সফলতার হার বেড়ে গেছে। বাংলাদেশেও এই পদ্ধতি ব্যবহার করে চিকিৎসা শুরু হয়েছে । কিন্ত তা এখনও পুরোদমে শুরু করা যায়নি বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে। তাই সেসব সীমাবদ্ধতা দূর করে কিভাবে এই পদ্ধতি সফল্ভাবে প্রয়োগ করা যায় তা সম্পর্কে আজকের আলোচনায় ভারত থেকে আগত সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সুনিল ভাট খুব সুন্দর এবং যৌক্তিক আলোচনা করেছেন।

নির্দিষ্ট শিশুর শরীরে নির্দিষ্ট টিউমারের জন্য আলাদা করে টিকাতাও আবার দ্রুত, কার্যকর এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিহীন। ক্যানসার মোকাবিলায় মেসেঞ্জার আরএনএ প্রযুক্তি এমনই প্রতিশ্রুতি বয়ে আনছে। ক্যান্সার ভ্যাক্সিন ‘‘টিউমারের বিরুদ্ধে নিজস্ব ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে লড়াই করার জন্য ইমিউন সিস্টেমকে প্রস্তুত করে তোলা আধুনিক প্রচেষ্টার মধ্যে পড়ে। ”নতুন মেসেঞ্জার আরএনএ টিকার মাধ্যমে নিজস্ব ইমিউন সিস্টেমকে এতটা শক্তিশালী করে তোলার চেষ্টা চলছে, যাতে সেটি নিজস্ব ক্ষমতায় টিউমারের মোকাবিলা করতে পারে। প্রচলিত টিকার মতো এ ক্ষেত্রে শত্রুর মৃত অংশ বিশেষ শরীরে প্রবেশ করানো হয় না। তার বদলে টিউমারের নির্দিষ্ট প্রোটিনের কাঠামো ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে পেশির কোষের মধ্যে চালান করা হয়। সেই কাঠামোর নির্দেশাবলী অনুযায়ী শরীর নিজস্ব ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে টিউমারের বিল্ডিং ব্লক তৈরি করে শরীরের ইমিউনসিস্টেম তখন সেটিকে বহিরাগত হিসেবে শনাক্ত করে অ্যান্টিবডির জন্ম দেয় প্রতিপক্ষ কেচিনে নিয়ে সংগ্রামের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় এ ক্ষেত্রে উৎপাদন প্রক্রিয়া বদলে দেওয়া হয়। ল্যাব অথবা জটিল প্রযুক্তির মাধ্যমে নয়, গোটা প্রক্রিয়া বরং রোগীর শরীরের মধ্যে ¯’ানান্তরিত করে সেখানেই উৎপাদন করা হয়। ফলে শরীর সেটি ভালোভাবে গ্রহণকরতে পারে এবং ইমিউনসিস্টেম ও সেটি একই ভাবে চিনতে পারে। জার্মানির ট্যুবিঙেন শহরের কিয়োর ভ্যাক এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না কোম্পানিও মেসেঞ্জার আরএনএ প্রযুক্তি কাজে লাগাচ্ছে। ক্যানসার মোকাবিলার ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি যথেষ্ট কার্যকর হতে পারে। টিউমার রোগীদের জন্য ভবিষ্যতে আলাদা করে দ্রুত টিকা তৈরি করাই এই উদ্যোগের লক্ষ্য। ক্যান্সার ভ্যাক্সিন সফল্ভাবে প্রয়োগ শুরু করা গেলে এটা সত্যি এক মাইলফলক হয়ে থাকবে। ফলে তাৎপর্য এবং সম্ভাব্য কার্যকারিতার বিচারে সম্পূর্ণ নতুন একক্ষেত্র খুলে যাচ্ছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই উদ্যোগের সুফল পাওয়ার কথা। ক্যানসারের বিরুদ্ধে সংগ্রামের ক্ষেত্রে নতুন এই প্রযুক্তি জোরালো হাতিয়ার হয়ে উঠবে বলে গোটা বিশ্বের টিউমার বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন। ডারেনেসাইসলাম চাইল্ডহুড ম্যালিগনেন্সিতে ক্যান্সার ভ্যাক্সিন এর ব্যবহার ও এর ফলাফল সম্পর্কে সহজ এবং সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন। যা আমাদের কে ভবিষ্যতে ক্যান্সার মোকাবেলায় আশা যোগাবে।

অনুষ্ঠানে বিএসএমএমইউর ডিন মোহাম্মদ হোসেন, প্রক্টর মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, হল প্রোভোস্ট এস এম মোস্তফা জামান, শিশু বিভাগের চেয়ারম্যান মানিক কুমার তালুকদার প্রমুখসহ ওই বিভাগের শিক্ষক, চিকিৎসক, রেসিডেন্ট, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিএসএমএমইউর শিশু হেমাটোলি বিভাগের চেয়ারম্যান এটিএম আতিকুর রহমান।

সেমিনারে “বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন ইন চিলড্রেন” শিরোনামে প্রবন্ধ পেশ করেন নারায়না হেলথ সিটি ব্যাঙ্গালোর, ভারত থেকে আগত সিনিয়র কনসাল্টেন্ট ডা সুনিল ভাট এবং “ ক্যান্সার ভ্যাক্সিন ইন চাইল্ডহুড ম্যালিগনেন্সি” শিরোনামে প্রবন্ধ পেশ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এর শিশু হেমাটোলজি এন্ড অনকোলজি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রেনেসা ইসলাম।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা