" />
নিজস্ব প্রতিবেদক: হাইকোর্টে বিচারপতিদের স্বাক্ষর নকল করে জামিননামা তৈরির সাথে জড়িত সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের তিনজন সদস্যদেরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের একটি দল।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- হাইকোর্টের সাবেক জমাদার মো. দাউদ এলাহী, সাবেক কারারক্ষী শেখ আব্দুল মাজেদ ও আশরাফুজ্জামান ওরফে রনি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিআইডির সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সিআইডি জানায়, সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে মাগুড়ায় একটি অভিযান চালিয়ে সাবেক কারারক্ষী শেখ আব্দুল মাজেদ ও আশরাফুজ্জামান ওরফে রনিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, ২০১১ সালে মাগুরা জজকোর্ট পরিদর্শনের সময় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর (বর্তমানে প্রধান বিচারপতি) কিছু মামলার নথি পরীক্ষা করে দেখতে পান যে, ১১ টি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের জামিন আদেশ, প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। তিনি বিষয়টি হাইকোর্টের তৎকালীন ডেপুটি রেজিষ্ট্রার মো. মাহফুজুল করিম আকন্দকে অনুসন্ধান করার জন্য নির্দেশ দেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তপূর্বক মো. রফিক ও মো. দাউদ এলাহীকে অভিযুক্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন দেন। যার প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিভাগের তৎকালীন কোর্ট কিপার মো. আব্দুল ওয়ারেছ বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় থানায় একটি মামলা করেন। শাহবাগ থানার মামলা নম্বর-২১। তারিখ- ২০/০৫/২০১৫ ইং। ধারা- ৪২০/৪৬৮/৪৭১/৪৭২ পেনাল কোড। মামলাটি দীর্ঘ সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে থানা পুলিশ ও দুদক তদন্ত করে। পরবর্তীতে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়।
সিআইডির বক্তব্য, আলোচিত এই মামলাটি পুলিশ সদর দপ্তর সিআইডিকে তদন্তভার দেয়। সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়ার সার্বিক নির্দেশনায় সিরিয়াস ক্রাইমের একটি টিম এজাহারনামের আসামি মো. দাউদ এলাহীর এবং ঘটনার সাথে জড়িত সাবেক কারারক্ষী শেখ আব্দুল মাজেদ আর আশরাফুজ্জামান ওরফে রনির জড়িত থাকার প্রমাণ পায়।
গ্রেপ্তারকৃত দাউদ এলাহীর বরাত দিয়ে সিআইডি বলছে, দাউদ এলাহী হাইকোর্ট বিভাগের জমাদার হিসেবে কর্মরত থাকার সময়ে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক ও জালিয়াত চক্র গড়ে তোলেন। এই চক্র হাইকোর্ট বিভাগের এই চক্রটি বিচারপতিদের নামে ভূয়া জামিনের আদেশ তৈরি করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার বিশেষ করে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের টাকার বিনিময়ে জামিন পাইয়ে দেয়ার কাজ করতেন। আর সাবেক কারারক্ষী শেখ আব্দুল মাজেদ এবং আশরাফুজ্জামান ওরফে রনি এবং দাউদ এলাহী পলাতক আসামিদের সহযোগিতায় দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ও সাজাপ্রাপ্ত মামলার আসামিদের জামিন আদেশ তৈরি করে প্রতারণা করে আসছে।
গ্রেপ্তারকৃত মো. দাউদ এলাহী মাগুড়া জেলার সদর থানার পারনান্দুয়ালী পূর্ব মুন্সী পাড়া গ্রামের মৃত মুন্সী আবু বকরের ছেলে আর শেখ আব্দুল মাজেদ এবং আশরাফুজ্জামান ওরফে রনি পুলিশ লাইনস্ দক্ষিন পাড়া গ্রামের মৃত বাহাজ উদ্দিন শেখের ছেলে এবং ইছাখাদা গ্রামের মো. রফিক মিয়ার ছেলে।