" />
নিজস্ব প্রতিবেদক: গত ১২ ফেব্রুয়াররি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিককেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হেপাটোলজি এ্যালুমনাই এসোসিয়েশনের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগে বসন্ত বরন ও পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। পিঠা উৎসব উপলক্ষে বিভাগটিতে চমৎকার বাসন্তী আবহের সৃষ্টি করা হয়েছিল।
সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটির আনুষ্ঠানিকতার উদ্বোধন করেন। উপাচার্য তার বক্তব্যে এ ধরনের আয়োজনের জন্য এসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের ভুয়সী প্রশংসা করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে ভবিষ্যতেও এই এ্যালুমনাই এসোসিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম ও গবেষনা প্রসারে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি এমনি ধরনের উদ্যোগগুলোও অব্যহত রাখবেন।
অনুষ্ঠানে বিএসএমএমইউ হেপাটোলজি এ্যালুমনাই এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল জানান, পেশাগত জীবনের একঘেয়েমিকে পাশে ঠেলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের জীবনে কিছুটা ভীন্নতার স্বাদ এনে দেয়া, হাসপাতালে চিকিৎসা এবং একাডেমিক কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকায় যাদের কদাচিৎ স্বাক্ষাত হয় বিভিন্ন স্পেশালিটির সেই সব বিশেষজ্ঞদের একসাথে কিছুটা সময় কাটানোর সুযোগ সৃষ্টি করা এবং পাশাপাশি চিকিৎসক-রোগীদের সম্পর্ককে গভীরতর করা এবং সর্বোপরি পেশাজীবিদের জীবনে বাঙ্গালীয়ানার চর্চা অব্যহত রাখার বহুমাত্রিক লক্ষ্য মাথায় রেখেই তাদের এসোসিয়েসন প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছেন এবং ভবিষ্যতেও তারা তাদের এ ধরনের উদ্যোগগুলো অব্যহত রাখবেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিএসএমএমইউর মেডিসিন অনুষদের ডিন মাসুদা বেগম, প্রক্টর হাবিবুর রহমান দুলাল, হেপাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান আইয়ুব আল মামুন এবং ভারতের চেন্নাইয়ের ডা. রেলা ইন্সস্টিটিউটের ট্রান্সপ্ল্যান্ট হেপাটোলজিস্ট ডা. দীনেশ জ্যোথিমানি। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ইউজিসি অধ্যাপক ডা. সেলিমুর রহমান, হেপাটোবিলিয়ারী, প্যানক্রিয়াটিক সার্জারী ও লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোহসেন চৌধুরী, পেডিয়াট্রিক গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি ও নিউট্রিশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. রোকনুজ্জামান, ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আফজালুন্নেসা, এনাটোমি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লায়লা আর্জুমান্দ বানু, কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক, ভাইরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মুনিরা জাহান, ক্লিনিক্যাল রিসার্চ অর্গানাইজেশনের এমডি জনাব হেলাল উদ্দিন, এভারেষ্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের এজিএম জনাব ইউসুফ লিটন প্রমুখ।
এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক ও হেপাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় এই আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগের শিক্ষক, রেসিডেন্ট, নার্স ও অন্যান্য কর্মকর্তরা ছাড়াও ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে লিভার বিশেষজ্ঞরা যোগদান করেন। অনুষ্ঠানে হেপাটোলজি এবং পেডিয়াট্রিক গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি ও নিউট্রিশন বিভাগে ভর্তি রোগী এবং তাদের স্বজনদের মধ্যেও পিঠা বিতরন করা হয়।
২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বিএসএমএমইউ হেপাটোলজি এ্যালুমনাই এসোসিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয়টির এ ধরনের প্রথম এসোসিয়েশন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এসোসিয়েশনটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং হেপাটোলজির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এসোসিয়েশনটির উদ্যোগে দেশি-বিদেশী হেপাটোলজিস্টদের নিয়ে নিয়মিতভাবে ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে দেশের বিভিন্ন শহরে বৈজ্ঞানিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়ে থাকে। কোভিড-১৯ প্যান্ডেমিকের সময়ও এসোসিয়েশনটি ধারাবাহিকভাবে ওয়েবিনার আয়োজনের মাধ্যমে তাদের একাডেমিক কার্যক্রম অব্যহত রেখেছিল।
এছাড়াও প্যান্ডেমিকের সময় এসোসিয়েশনের উদ্যোগে ডায়াগনষ্টিক ও থেরাপিউটিক এন্ডোস্কপি চালু রাখার জন্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর তৈরী করে সে অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী হাসপাতালে এন্ডোস্কপি সার্ভিস সচল রাখা হয় এবং পরবর্তী সময়ে এই এসওপিটি কপি রাইটও করা হয়। কোডিভ-১৯ প্যান্ডেমিকের সময়ে পৃথিবীর অধিকাংশ হাসপাতালে এন্ডোস্কপি বন্ধ রাখা হলেও এই এসওপি অনুসরন করে বাংলাদেশের লিভার বিশেষজ্ঞরা সে সময়ে চিকিৎসক, রোগী এবং অন্যান্য সয়াহক স্টাফদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এই সেবা অব্যাহত রেখেছিলেন। তাছাড়াও কোভিড-১৯ প্যান্ডেমিকের সময় এসোসিয়েশনের উদ্যোগে পঞ্চাশজনের বেশি লিভার বিশেষজ্ঞ বিনামূল্যে নিজস্ব উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাথে সহযোগীতাক্রমে টেলিমিডিসিন সেবা প্রদান করেছিলেন, যা বহু মানুষের উপকারে এসেছিল এবং বহুল প্রশংসিতও হয়েছিল।