" />
বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ায় ধান-চাল কালোবাজারির অভিযোগে চারজনের বিরুদ্ধে কন্ট্রোল অব এসেনসিয়াল কমোডিটিস অ্যাক্ট-১৯৫৬ আইনে আইনে মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার(১৯ জানুয়ারি) রাতে শেরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন শেরপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মামুন-এ-কাইয়ুম।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, এসিআই ফুড লিমিটেড কোম্পানীর সত্ত্বাধিকারী (রাইস ইউনিট) আরিফ দৌলা (৪৫), সিনিয়র অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩০), শিনু এগ্রো ইন্ডাস্ট্রির সত্ত্বাধিকারী শামীমা ইসলাম (৫০) এবং ব্যবস্থাপক মো. এনামুল হক (৫২)।
এর আগে গত ১৮ জানুয়ারি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন শেরপুর উপজেলার গাড়িদহের জোয়ানপুর এলাকায় মেসার্স শিনু এগ্রোফুড ইন্ডাস্ট্রিজের পাঁচটি গুদামে অভিযান চালায়। এসময় প্রায় ১৯২৯ দশমিক ৮৭৫ টন চাল এবং ২৫৮১ দশমিক ৬৩ টন ধান অবৈধভাবে মজুদ অবস্থায় জব্দ করেছে জেলা খাদ্য অধিদপ্তর। যার সরকারি হিসাবে এর মূল্য ১৫ কোটি ৩৩ লাখ ৪০ হাজার ৩৯০ টাকা।
সুত্রমতে জানা যায়, প্রচলিত কন্ট্রোল অব এসেনসিয়াল কমোডিটিস অ্যাক্ট-১৯৫৬ আইন অনুযায়ী, সরকারি লাইসেন্স বাদে কোন ব্যবসায়ী এক টনের বেশি খাদ্যশস্য বা সামগ্রী তার অধিকারে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না। তবে চাউলের ক্ষেত্রে ১৫ দিন ও ধানের ক্ষেত্রে ৩০ দিন(একমাস) মজুদ হিসেবে রাখতে পারার বিধান রয়েছে ওই আইনে। অন্যদিকে এসিআই ফুড লিমিটেডে তাদের মজুদ করা ধান-চালের স্বপক্ষে কোনো নিবন্ধন বা সরকারি কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এবং তাদের মজুদ করা চাল নিষিদ্ধ প্লাস্টিক বস্তায় প্যাকেটজাত করে রাখায় এ আইনটি আরো কার্যকর হয়েছে।
শেরপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মামুন-এ-কাইয়ুম বলেন, তারা কালোবাজারির উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে মজুদ করে দেশে কৃত্রিমভাবে ধান ও চালের সংকট সৃষ্টি করতে চাইছে। একই সঙ্গে বাজার অস্থিতিশীল ও মূল্য বৃদ্ধির পায়তারা করছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (১) ২৫ ডি ধারায় মামলা করা হয়েছে।
এবিষয়ে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আতাউর রহমান খন্দকার বলেন, অবৈধ মজুদ রাখায় থানায় একটি প্রচলিত আইনে মামলা রুজু হয়েছে। তদন্তক্রমে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন জানান, একই গুদাম ও মিলে থাকা ধান-চাল মজুতের কোনো অনুমতি নেই এসিআই কোম্পানির অবৈধভাবে ধান-চাল মজুতের অভিযোগে কয়েক মাস আগেই একই প্রতিষ্ঠানকে ৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। আবারও শিনু এগ্রো ইন্ড্রাষ্টিতে অভিযান চালানো হলে কালোবাজারির উদ্দেশ্যে রাখা এসব ধান-চালের সন্ধান মেলে। পরে সেগুলো শেরপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার জিম্মায় রাখা হয়। এর আগে অবৈধভাবে ধান-চাল মজুতের অভিযোগে গত ২৩ ডিসেম্বর বগুড়ার সদর উপজেলার মানিকচক এলাকায় মেঘনা গ্রুপের ২ হাজার ৫০০ টন ধান জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে বগুড়া সদর থানায় মেঘনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয় বলে দাবী করেন ওই কর্মকর্তা।