" /> ফুলবাড়ীতে পুত্রকে ফিরে পেতে মায়ের আর্তনাদ,২০ মাসেও সন্ধান মেলেনি পুত্র রবির, – নাগরিক দৃষ্টি টেলিভিশন
শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০৫:২৬ অপরাহ্ন

ফুলবাড়ীতে পুত্রকে ফিরে পেতে মায়ের আর্তনাদ,২০ মাসেও সন্ধান মেলেনি পুত্র রবির,

20230114 104150 min

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:  কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে নিখোঁজ হওয়ার ২০ মাস পেরিয়ে গেলেও সন্ধান মেলেনি ১২ বছরের শিশু রবিউল ইসলাম রবির।

সে উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামের বাসিন্দা তৌহিদুল ইসলাম টুনকু ও রাশিদা বেগমের ২য় পুত্র এবং ফুলবাড়ী আদর্শ উচ্চ  বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ  শ্রেণির ছাত্র। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও ছেলের সন্ধান না পাওয়ায় পাগলিনী প্রায় মা। বিলাপ করেন- মোর নাড়িছেঁড়া ধন তুই কোটেরে বাবা। কতদিন তোর সোনামুখ দেখং না। মোর মানিক তুই কোটে গেলুরে, বলতে বলতে বেহুঁশ হয়ে যান ক্ষণে ক্ষণে।

এভাবেই গত ২০ মাস ধরে আহাজারি করছেন রবিউলের মা। ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় সে। এরপর তার পরিবারের লোকজন প্রতিবেশী ও সকল আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পায়নি। নিখোঁজ হওয়ার ছয়দিন পর ২০ ফেব্রুয়ারি ফুলবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তার বাবা।

এ ঘটনার পাঁচ মাস পর রবিউলের বাবা রবিউল নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কচাকাটা থানার  সুবারকুটি গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন, একই এলাকার রেজাউল করিম ও ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামের হাসান মিয়া ও তার স্ত্রী তানজিনা বেগমের বিরুদ্ধে ফুলবাড়ী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। 

20230114 104352 min edited scaled

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন এলাকায় নিখোঁজ রবিউলের বড় চাচার বাড়ী ভাড়া নিয়ে সাখাওয়াত ও রেজাউল করিম সেখানে কিছু ছাত্রকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কোরআন শিক্ষা দিত। তাদের এ শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকা অবস্থায় তারা রবিউলসহ বেশ কয়েকজনকে বিশ হাজার টাকা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখাতো। এভাবেই প্রলোভন দেখানোর কিছুদিন পর রবিউল নিখোঁজ হয়। রবিউল নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে গাঁ ঢাকা দেয় রেজাউল, সাখাওয়াত। বন্ধ হয় তাদের কুরআন শিক্ষা কার্যক্রম। রবিউলকে রেজাউল ও সাখাওয়াত সঙ্গে নিয়ে গেছেন এবং হাসান আলী ও তার স্ত্রী তানজিনা বেগম রবিউল নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

নিখোঁজ আদরের সন্তানকে ফিরে পেতে দিন রাত বিভিন্ন জায়গায় ছুটছেন তার বাবা তৌহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমার শিশু সন্তান নিখোঁজ হওয়ার পর ফুলবাড়ী থানায় ডায়েরি এবং পরবর্তীতে চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি। নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ২০ মাস কেটে গেল। ছেলের কোন সন্ধান পাই নি। এদিকে ওর মা ছেলের শোকে কাতর। ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করে না। সারাক্ষণ ছেলের নাম ধরে বিলাপ করে। তার আহাজারি আর সহ্য হয় না। আমাদের ছেলেটা কোথায় আছে, কেমন আছে জানি না- বলেই হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন তিনি। 

এ ব্যাপারে অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা ফুলবাড়ী থানার এসআই খোরশেদ আলম বলেন, নিখোঁজ শিশুটি উদ্ধারে সীমান্তবর্তী থানাসহ দেশের সব পুলিশ স্টেশনে শিশুরটির সব তথ্য প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও পিবিআই ও গোয়েন্দা সংস্থাকে শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা জানানো হয়েছে। তাকে উদ্ধারে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা