" /> ক্লুলেস হত্যার রহস্য উন্মোচন করল ডিবি – নাগরিক দৃষ্টি টেলিভিশন
বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩, ০৪:০৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদ

ক্লুলেস হত্যার রহস্য উন্মোচন করল ডিবি

WhatsApp Image 2023 01 14 at 15.08.00 min

নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্লুলেস হত্যা ও গুম-ছিনতাইয়ের একাধিক ঘটনায় জড়িত সংঘবদ্ধ চক্রের ছয় সদস্য গ্রেপ্তার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিএমপি ডিবি) উত্তরা বিভাগ। শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত মৌলভীবাজারের রাজনগর এলাকা এবং সহ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-মো. খালেদ খান শুভ, মো. টিপু, মো. হাসানুল ইসলাম ওরফে হাসান, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, আব্দুল মজিদ এবং মো. সুমন। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে একটি স্যামফোনি বাটন মোবাইল, চাকু (সুইস গিয়ার), অটো রিকশা ও পাথর উদ্ধার করা হয়।


শনিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপি ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

WhatsApp Image 2023 01 14 at 15.08.01 min


সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর রাতে মো. মোস্তফা নামের এক যুবক রাতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালানোর জন্য বাসা থেকে বের হয়ে যায়। পরবর্তীতে কোথাও মোস্তফার সন্ধান না পাওয়ায় গত ১২ ডিসেম্বর তার মা দক্ষিণখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি ( নিখোঁজ জিডি) জিডি নম্বর ৪৫৯। মোস্তফার মা লোক মারফত জানতে পারেন ১৭ ডিসেম্বর দক্ষিণখান থানার আসিয়ান সিটির ২৩ নম্বর সড়কের পশ্চিম পার্শ্বে আসিয়ান সিটির নিজস্ব ফাঁকা প্লটে একটি অজ্ঞাতনামা লাশ পড়ে আছে। পরে মোস্তফার বাবা-মা ওই জায়গায় গিয়ে অজ্ঞাতনামা লাশটি তার ছেলে মোস্তফার বলে সনাক্ত করেন। এ ঘটনায় নিহত মোস্তফার মা শামছুন্নাহার বেগম বাদি হয়ে দক্ষিনখান থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।


সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির ডিবি প্রধান বলেন, মামলাটি ডিবি পুলিশ তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত আসামিদের সনাক্ত করা হয়। গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের বিমানবন্দর জোনাল টিম মৌলভীবাজারে রাজনগর থানার ইন্দানগর গ্রামের মিনা বেগমের বসত বাড়ি থেকে আসামি মো. খালেদ খান শুভ কে গ্রেপ্তার করেন। পরে শুভর দেখানো ও সনাক্ত মতে তার কাছ থেকে নিহত মোস্তফার ব্যবহৃত একটি সিমফোনি বাটন মোবাইলটি উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত মো. খালেদ খান শুভর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দক্ষিনখান এলাকা থেকে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত মো. টিপু এবং মো. হাসানুল ইসলাম ওরফে হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয় । পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃত টিপু এবং হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনায় জড়িত মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও আব্দুল মজিদদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত জাহাঙ্গীর হোসেন ও আব্দুল মজিদদের কাছ থেকে এই মামলার ঘটনায় নিহত মোস্তফার অটো রিকশাটি উদ্ধার করা হয়। আরেকটি হত্যাকান্ডের ঘটনায় গুম, ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি চাকু (সুইস গিয়ার) উদ্ধার করা হয়।


গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গত ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর টিপু, হাসান এবং শুভ যাত্রী সেজে ব্যাটারীচালিত অটো রিকশা চালককে গাজীপুরের কালিগঞ্জ থানার পূর্বাচলের ২৫ নম্বর সেক্টরের নির্জন জায়গায় নিয়ে শুভ’র কেনা একটি ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে অপর একটি অটো রিকশা চালককে হত্যা করে তার লাশ রোডের পাশে ড্রেনে ফেলে অটো রিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনা কালিগঞ্জ থানায় একটি মামলা করা হয়। ঢাকা মহানগরীয় থানা ও ঢাকার আশপাশের জেলার বিভিন্ন থানায় হত্যা, গুম ও ছিনতাই ঘটনায় আরো মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা এসব ঘটনার সাথে জড়িত কিনা, তা ডিএমপি ডিবি পুলিশ খতিয়ে দেখছে।


ডিবি উত্তরা বিভাগের উপ কমিশনার ডিসি মো. আকরামুল হোসেনের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে নিহত মোস্তফার সত্তরোর্ধ্ব মা শামছুনাহার। তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ছেলে নিখোঁজ হওয়ার ১১দিনের মাথায় আমার মেয়ের জামাইয়ের কাছে একটি ফোন আসে। বলা হয়েছিল আশিয়ান সিটি নামে একটি জায়গায় আমার ছেলের লাশ পড়ে আছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি আমার ছেলের নিথর দেহ পড়ে আছে।

আমি এখন কার কাছে যাবো ? আহাজারি করে তিনি বলেন, আমার ছেলের বউসহ আমার তিন নাতি-নাতনি আছে। তারা ছোট ছোট, তাদের নিয়ে আমি এখন কোথায় যাব। আমার ছেলেই আমার সংসার চালাতো। আমার কেউ রইলো না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা