" />
রংপুর ব্যুরোঃ পৌষ শুরুতে হাড় কাপানো শীত আর হিমেল হাওয়ায় চরম বিপাকে খেটে খাওয়া নি¤œ আয়ের মানুষ।
এরই মধ্যে উত্তরের জেলাগুলোতে শীত জেঁকে বসে শীতের তীব্রতা কমতে শুরু করেছে তাপমাত্রা নেমেছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ফলে বিপাকে পড়েছেন এ অঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষ,কষ্ঠে আছে শিশু ও বয়স্করা। শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। বিশেষ করে শিশুরা নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, জ্বর-সর্দিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। রংপুর বিভাগের হাসপাতালগুলোতেও বাড়ছে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা। হাসপাতাল গুলোতে হঠাৎ করে রোগীর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। রংপুর বিভাগের আট জেলায় গত একদিনে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়া ৫৯১ শিশুকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর গত ১৫ দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে প্রায় ৮ হাজারের বেশি শিশু। এর মধ্যে শুধু রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ২০ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ডায়রিয়ায় নিউমোনিয়া ও ঠান্ডাজনিত রোগী আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয় ৮১২ জন। যাদের বয়স ১ মাস থেকে দেড় বছরের মধ্যে।
এদের মধ্যে ৮ শিশু ইতোমধ্যে মারা গেছে। বৃুহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি শয্যায় একাধিক শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। বেড না পেয়ে অনেক শিশুকে মেঝেতে বিছানা পেতে রাখা হয়েছে । রোগীর চাপে নার্স ও চিকিৎসকরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। হাসপাতালের শিশু বিভাগের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স আজমিরা বেগম জানান, এবার কোল্ড ডায়রিয়ায় শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। চলতি মাসে প্রতিদিন কম বেশি ৭০-৮০টি শিশু নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। তিন মাস বয়সী শিশু নিবিড়কে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন জরিনা খাতুন নামে এক নারী।
সৈয়দপুর থেকে আসা এই নারী জানান, তার সন্তানের কয়েক দিন ধরে সর্দি-কাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। হঠাৎ অবস্থার অবনতি হওয়ায় গতকাল হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন তিনি। শীতের কারণে নিউমোনিয়া হয়েছে বলে চিকিৎসকরা তাকে জানিয়েছেন এদিকে কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, দিনাজপুর ও পঞ্চগড়সহ রংপুর বিভাগের অন্যান্য জেলার হাসপাতালগুলোতেও শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানা গেছে। রোগীর চাপে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। সামণে শীত বেশি হলে রোগীর চাপ আরও বাড়াবে কয়েকগুণ বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎকেরা। কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সরা জানান, শীতজনিত রোগের কারণে ১ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী বেশির ভাগ শিশুই এখন জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়ারিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। আগে এধরনের পরিস্থিতি ছিলনা । কনকনে ঠান্ডা আর হিমেল হাওয়ায় খেটে খাওয়া নি¤œ আয়ের মানুষগুলো পড়েছেন চরম বিপাকে । রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, চলতি সপ্তাহে এই অঞ্চলে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে এবং শৈত্যপ্রবাহ বাড়তে পারে। এখন তাপমাত্রা ১০ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। চলতি মাসে দুটি শৈত্য প্রবাহ আরও হতে পারে।