" />
সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপি নেতারা এখন ‘ধীরে চলো নীতি’ অবলম্বন করবেন। আসন্ন আন্দোলনে রাজধানীর নাগরিকদের সম্পৃক্ততা নিয়ে শুরুতেই দুশ্চিন্তায় বিএনপি। আগামীকাল শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) রাজধানীতে বিরোধী দলগুলোর গণমিছিলের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি শেষে নতুন যে কর্মসূচি আসবে—তাতে এর প্রতিফলন থাকবে। বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে এ মনোভাবের বিষয় উঠে আসে।
বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের নেতারা জানিয়েছেন, ডিসেম্বরের শুরু থেকে বিএনপির সঙ্গে সরকারের আচরণ, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গ্রেফতার, ৭ ডিসেম্বর নয়া পল্টনে তার একাকী অবস্থান, মির্জা আব্বাসকে বাড়ি থেকে আটকের প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রাজধানীতে এখনও বিএনপির কর্মসূচির সঙ্গে জনসম্পৃক্ততার অভাব রয়েছে। আর এই পর্যবেক্ষণের পরে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা কর্মসূচি নির্ধারণে ধীরে চলো নীতি অবলম্বনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা আভাস দিয়েছেন, শুক্রবার গণমিছিলের পর নতুন কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আসন্ন কর্মসূচিতে জনসম্পৃক্ততাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সমাবেশ, গণ-অবস্থান কর্মসূচি, স্বেচ্ছা কারাবরণ কর্মসূচি, বিভাগীয় সমাবেশ, মহাসমাবেশ, মিছিলের কর্মসূচি আসতে পারে। একইসঙ্গে কর্মসূচির দাবির মধ্যে জনসম্পৃক্ত ইস্যুগুলোকে আরও গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ে নীতিনির্ধারকরা জোর দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে বিএনপির অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির মূলতবি বৈঠকেও এ বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, অক্টোবর থেকে সারা দেশে বিএনপির সমাবেশগুলোতে যে সাড়া এসেছে—ঢাকায় এসে সেই সাড়ায় টান পড়েছে। বিএনপি অফিসে পুলিশের হামলা, তল্লাশি, মির্জা ফখরুল, আব্বাসের আটক, ব্যাপক হারে গ্রেফতার ইত্যাদি কারণে ঢাকায় ভাটা এসেছে বলে মনে করেন কোনও কোনও দায়িত্বশীল। সেক্ষেত্রে বিএনপির নেতারা মনে করছেন, রাজধানীতে সরকারবিরোধী আন্দোলনের মোমেন্টাম তৈরি করতে হলে আরও সময় লাগবে। পাশাপাশি জনসম্পৃক্ত কর্মসূচিও দিতে হবে।
গত কয়েক দিনে পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, বিএনপির যেসব সিনিয়র নেতা ‘এবার মরবো, নয় বাঁচবো’ বলে কঠোর আন্দোলনের আভাস দিতেন, তারাও এখন খানিকটা নীরব।
দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা জানান, বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে নতুন করে মামলায় আসামি করা, পরিস্থিতি নিয়ে পরিষ্কার অবস্থান না থাকায় সিনিয়র নেতারা ‘প্রকাশ্য বক্তব্য’ থেকে প্রায় ‘নাই’ হয়ে গেছেন। অনেকে গণমাধ্যমে বক্তব্য প্রদান থেকেও বিরত রয়েছেন। কারও কারও দাবি, অনেকটাই ‘ভয় পেয়ে’ বসেছে বিএনপিকে। সেক্ষেত্রে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে নেতাদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দলীয় কর্মসূচি সর্বোচ্চ শান্তিপূর্ণ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দলের আসন্ন কর্মসূচি নিয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘ ক্ষমতাসীন দলের পেশিশক্তি, রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধাবস্থান, সমস্ত উসকানির পরও বিএনপি অহিংস অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু বিএনপি জনগণের ওপর আস্থা রাখছে। বিএনপির লক্ষ্য সম্পূর্ণ সরকারের আচরণের বিপরীতমুখী। বিএনপির কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও অহিংস থাকবে এবং জনসম্পৃক্ত হবে।’ সরকারবিরোধী আন্দোলনের শুরুতেই দুশ্চিন্তায় বিএনপি