" />
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এদেশের গুটিকয়েক মানুষ ছাড়া জনগণ বহু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। মা বোনেরা ইজ্জত হারিয়েছেন। সেই বাংলাদেশ আমরা পুনরুদ্ধার করতে চাই। টেক ব্যাক বাংলাদেশ হলো সেই বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশে একদম সুষ্ঠুভাবে গণতন্ত্রের চর্চা হবে। মানুষ ভোট দিতে পারবে। তাদের পছন্দমতো প্রতিনিধি তৈরি করতে পারবে। তাদের জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। যে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সুবিচার হবে। বিচার ব্যবস্থাকে এখানে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ করা হবে। আমাদের প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করা হবে। সেই কমিটমেন্ট মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে ছিল।
তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশকে পুনরুদ্ধার করতে চাই। যেমনিভাবে আপনারা দেখেছেন, আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য ১০ দফা প্রণয়ন করেছি। যে দেশের জন্য বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণ দিয়েছেন, সেই বাংলাদেশ আমরা পুনরুদ্ধার করতে চাই।
আজ বুধবার ১৪ ডিসেম্বর সকালে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) এর নেতৃত্বে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে সম্প্রীতি বাংলাদেশ সংগঠনটি।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ত্রিশ লাখ লোক শহীদ হয়েছেন, দুই লাখ মা বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন সেই বাংলাদেশকে আমরা ফিরিয়ে দিতে চাই। বিএনপির টেক ব্যাক বাংলাদেশ স্লোগানের মানে হলো, সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশকে পুনরুদ্ধার করে গণমানুষের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া, গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া।
আওয়ামী লীগ ও সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির এই বর্ষীয়ান নেতা বলেন, এ সরকার দেশের অর্থ লুণ্ঠন করে দেশকে ধ্বংসের কিনারে ঠেলে দিয়েছে। নিজেদের স্বার্থে তারা বিচারালয়কে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তাকেও ধ্বংস করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরকারের নিয়মবহির্ভূত হুকুম পালন করতে গিয়ে আজকে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা পেয়েছে।
তিনি বলেন, এ সরকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় চাপাবাজি ও নানা অপপ্রচার করতে গিয়ে জনগণের কাছে ধরা খেয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ সরকার এ দেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। এখানে সরকার জনগণের সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকারকে গায়েব করে দিয়ে ক্ষমতায় থাকার পথ প্রশস্ত করতে চায়।
বিএনপির ঢাকা সমাবেশের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, যে সরকার গায়ের জোরে দিনের ভোট রাতে করতে চেয়েছে, জনগণ বিএনপির সমাবেশে এসে সে সরকারের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। তারা বলেছে, হত্যা-গুম-খুনের সরকারকে বিদায় জানাতে চায়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন বলেছেন, নীতিগত প্রশ্নে বিএনপি কখনও পাকিস্তানের ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাস করে না। বিশ্বাস করে এক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়। আজকে আওয়ামী লীগ সেই গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে।
যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামের সঙ্গে বিএনপির রাজনৈতিক সংযোগ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল মঈন বলেন, জামায়াতের সঙ্গে জোট তো ৯৬ সালে আওয়ামী লীগও করেছিল। এখন কথা হলো, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তাদের সঙ্গে জোট করতে হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি বলে যারা দাবি করে, সেই আওয়ামী লীগকেও কিন্তু তাদের সঙ্গে জোট করতে হয়েছে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের প্রেক্ষাপট নিয়ে তিনি বলেন, একাত্তরের সেই দোসরের দল জাতিকে মেধাশূন্য করতে, চিরতরে ধ্বংস করতে ১৪ ডিসেম্বর সেই নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল। তারা ভালো করে জানতো, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করতে পারলে বাংলাদেশকে মেরুদণ্ডহীন করা যাবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের কার্যকরী সদস্য সাইফ আহমেদ ও তাপস হালদার। অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক জাভেদ আলম, রাজীব কর, আবু তালেব ও ফয়জুল বারী