সেদিনের ঘটনাটা হয়তো এখনো ভুলতে পারেননি সানজিদা। হয়তো চোখের সামনে ভেসে উঠছিল সেই দিনটা। ভুলবেন কী করে, মন খারাপের মুহূর্তগুলো কি ভুলা যায় সহজে? ২০১৭ সালের সেই দিনে যে প্রথমবার সাফের ফাইনাল খেলে এসে রানার্সআপ স্বীকৃতি নিয়েও দেশে ফিরে বিমানবন্দরে বরণ করতে পাশে পাননি কাউকে, সংবর্ধনা তো বহুদূর, পাননি কোনো প্রকার অভ্যর্থনাও।
কিন্তু এবার ফাইনালে উঠার পর দৃশ্যপটটা যেন বদলে গিয়েছিল। ওদের নিয়ে সারাদেশে যেন সাড়া পড়ে গিয়েছিল। সবার এমন সমর্থনে অভিভূত হয়ে সানজিদাও একটা স্ট্যাটাস লিখে ফেলেন মনের আবেগ আর ভালোবাসা মিশিয়ে। সেই লেখার একটা লাইনে সানজিদা বলেন, ‘ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন বাসে ট্রফি নিয়ে না দাঁড়ালেও চলবে, সমাজের টিপ্পনীকে একপাশে রেখে যে মানুষগুলো আমাদের সবুজ ঘাস ছোঁয়াতে সাহায্য করেছে, তাদের জন্য এটি জিততে চাই।’
সানজিদা হয়তো বলতে চেয়েছিলেন, আপনাদের থেকে আমরা কিছু চাই না, আপনাদের ছাদখোলা বাসও চাই না। চাই শুধু সমর্থন আর টিপ্পনী থেকে মুক্তি। যাহোক, অন্য সবার মতো ক্রীড়াঙ্গনের হর্তাকর্তাদেরও আবেগী করে তুলে। চ্যাম্পিয়ন না হলে কি হতো বলা যায় না, তবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে লাল-সবুজের স্বপ্ন সারথীদের স্বপ্নপূরণ করতে চায় ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। ছাদখোলা বাসেই তাদের বরণ করতে চায়, অভ্যর্থনা দিতে চায় শিরোপাজয়ীদের।
ফলে দেশের একমাত্র ছাদখোলা বাসের সন্ধানে কক্সবাজারে যোগাযোগ করে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। তবে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সেই বাসটি আর ব্যবস্থা করা যায়নি। ফলে ছাদখোলা বাস প্রস্তুত করতে বিকল্প পদ্ধতিতে বিআরটিসির দুইতলা বাসের উপরের ছাদ কেঁটে টানা ২৪ ঘণ্টার অবিরাম চেষ্টায় প্রস্তুত করা হয় বহুল কাঙ্ক্ষিত দ্বি-তলা বাস। সাজানোও হচ্ছে তা চ্যাম্পিয়নদের রঙে।
তবে প্রশ্ন হতেই পারে, এই বাসে করে কোথায় থেকে চ্যাম্পিয়নরা কোথায় যাবে? গতকাল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সভায় বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম জানান, ‘বিমানবন্দরে মেয়েদের ফুল দিয়ে বরণ করা হবে। মিষ্টিমুখ করানো হবে তাদের। তারপর ছোট একটা সংবাদ সম্মেলন। এসব শেষ করে ছাদখোলা বাসে মেয়েদের নিয়ে আসা হবে বাফুফে ভবনে।’
অর্থাৎ বিমানবন্দর থেকে শিরোপাজয়ীদের বহনকারী ছাদখোলা বাসটি কাকলী, জাহাঙ্গীর গেট, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে বিজয় সরণি। অতঃপর সেখান থেকে তেজগাঁও, মৌচাক, কাকরাইল, আরামবাগ, মতিঝিল শাপলা চত্বর হয়ে বাফুফে ভবন। সেখানে সাফজয়ী দলকে বরণ করতে প্রস্তুত থাকবেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।