" />
জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং পুলিশের গুলিতে দলের তিন কর্মী নিহতের প্রতিবাদে বিএনপির পূর্বঘোষিত মোমবাতি প্রজ্বলন ও মৌন অবস্থান কর্মসূচি ছিল। শনিবার ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের আয়োজনে এ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে বনানীর কাকলী থেকে গুলশান-২ নম্বর গোলচত্বর পর্যন্ত সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালনের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এর আগে পুরো এলাকা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দখল করেন।ঢাকা ও কুমিল্লায় সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের হামলায় বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়ালসহ দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আহত হয়েছেন। এর মধ্যে বরকতউল্লাহ বুলুর অবস্থা গুরুতর।
এই পরিস্থিতির মধ্যে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বনানীর কামাল আতার্তক অ্যাভিনিউয়ের এক পাশে মোমবাতি হাতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ান বিএনপির নেতাকর্মীরা। তখন রাস্তার উল্টোদিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা স্লোগান দেন।
বিএনপির মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি চলাকালে দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা বক্তব্য দেন। রাত পৌনে আটটার দিকে কর্মসূচির প্রধান অতিথি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বক্তব্য শেষ করার পরপরই ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রথমে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী লাঠিসোঁটা নিয়ে একযোগে হামলা করলে সবাই বনানী কে ব্লকের ২৬ নম্বর রোড দিয়ে সরে যান। এ সময় ইটপাটকেল ও লাঠির আঘাতে বেশ কয়েকজন আহত হন। কর্মসূচিতে থাকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানকে কয়েকজন ধরাধরি করে রাস্তা পার করেন। এ সময় সেলিমা রহমানসহ দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল আহত হন। হামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য তাবিথ আউয়ালকে রক্তাক্ত অবস্থায় ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হামলার আগে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে কামাল আতার্তুক অ্যাভিনিউয়ের তিনটি স্থানে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা মহড়া দেন। এ সময় ঘুরে ঘুরে রাস্তায় তাদের মিছিল করতে দেখা যায়। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে দুটি মিছিল থেকে নেতাকর্মীরা বিএনপির কর্মসূচিতে হামলার উদ্দেশ্যে তেড়ে যান। সে সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যার পর থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাংলাদেশ ইউএই মৈত্রী কমপ্লেক্সের সামনে জড়ো হতে থাকেন। সেখানে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এম এ কাদের খান, বনানী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি জসিম উদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর মোশাররফ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন ও বনানী থানা কমিটির সাবেক সভাপতি মো. মাসুদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত হন। এ সময় তারা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবারসহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
অপরদিকে বনানী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও স্থানীয় কাউন্সিলর মফিজুর রহমানের নেতৃত্বে আরেকটি মিছিল বনানী কাঁচাবাজারের পাশে কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ে অবস্থান নেয়।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এম এ কাদের খান বিএনপির কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগকে মিথ্যাচার দাবি করে বলেন, তারা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটির সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে দেখেন বিএনপির নেতাকর্মীরা মোমবাতি নিয়ে কর্মসূচি পালন করছেন। এ সময় তাদের মিছিল বিএনপির কর্মসূচি থেকে নিরাপদ দুরুত্ব বজায় রেখে চলে যায়। এরপর তিনি সংবাদ পান- বিএনপির কর্মসূচিতে হামলা হয়েছে।