বান্দরবান প্রতিনিধিঃ
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে মর্টার শেল বিস্ফোরণে নিহত ও আহতের ঘটনায় চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। স্থানীয় অভিবাবকদের উদ্বেগের কারণে ঘুমধুম এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র সরিয়ে
কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং পরীক্ষা কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করেছে প্রশাসন।নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ড তমব্রু হেডম্যান পাড়া সীমান্তের ৩৫ নম্বর পিলার সংলগ্ন ৩০০ মিটার মিয়ানমারের অভ্যন্তর হতে গরু ফিরিয়ে আনতে গিয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে হেডম্যান পাড়া এলাকার অংঞাথোয়াই তঞ্চঙ্গ্যা নামে এক বাংলাদেশী যুবক পা হারায়।
পরে একই দিন সন্ধ্যা ৮ টায় মিয়ানমার হতে ছোড়া ২টি মর্টর শেল একই
পরে একই দিন সন্ধ্যা ৮ টায় মিয়ানমার হতে ছোড়া ২টি মর্টর শেল একই ইউপির ২নম্বর ওয়ার্ড কোনার পাড়া নোম্যান্সল্যান্ড এলাকার রোহিঙ্গা শিবিরের কাছাকাছি এসে পড়ে। ঘটনাস্থলে মো.ইকবাল(১৭) নামে এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত ও অন্তত ৬ জন আহত হন।এই ঘটনায় এলাকায় চরম আতংক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে।এছাড়া প্রায় প্রতিদিন সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তর হতে হালকা ও ভারি অস্ত্রের ফায়ারের বিকট শোনা যাচ্ছে। চলমান এসএসসি পরীক্ষার একটি পরীক্ষা কেন্দ্রও রয়েছে ঘুমধুম এলাকায়।
এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার থেকে ছোড়া কয়েকটি ক্ষুদ্রান্তের গোলা এসে পড়েছিল ঘুমধুম ইউপির ২ নম্বর কোনার পাড়া এলাকায়।
৩ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া গোলা বাংলাদেশ সীমান্তের অভ্যন্তরে
সীমান্ত পিলার ৪০-৪১ এর মাঝামাঝি এলাকায় এসে পড়েছিল।
২৮ আগস্ট মিয়ানমার থেকে ছোড়া ২টি মর্টর শেল
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ইউপির তমব্রু উত্তর পাড়া জামে মসজিদ এলাকায় এসে পড়ে।সেই মর্টর শেল গুলো বিষ্ফোরিত না হওয়ায় কোন প্রকার হতাহতের ঘটনা ঘটে নি তখন।
স্থানীয় বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ জানান, প্রায় মাসখানেক ধরে বান্দরবান নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ইউনিয়নের মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা ওপারে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষ ও গোলাগুলি চলছে ।এনিয়ে চতুর্থ বারের মত গোলা ও গুলি এসে পড়েছে। স্বর্বশেষ কোনার পাড়া এলাকায় যে গোলাটি পড়ে এতে ঘটনাস্থলে ১ জন নিহত ও অন্তত ৬ জন আহত হয়েছে।গোলাগুলির শব্দে আগে থেকে এলাকায় আতংক বিরাজ করলেও গত কালের ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।ঘর থেকে বাইরে যেতেও ভয় পাচ্ছে স্থানীয়রা।
মোঃ সৈয়দ জানান,তার সন্তানের এসএসসি পরিক্ষা চলছে।পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে ভয় পাচ্ছিল সে। পরীক্ষা কেন্দ্র স্থানান্তরিত করায় অনেকটা স্বস্তি প্রকাশ করেন তিনি।
ঘুমধুম ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান,গতকাল মটর শেল বিষ্ফোরন হয়ে নিহত ও আহতের ঘটনায় স্থানীয়রা চরম ভয়ে আছে।সীমান্ত লাগোয়া জুম ক্ষেতে ফসল আনতে যেতেও ভয় পাচ্ছে।তিনি আরো বলেন আজ সকালেও সীমান্তের ওপারে কয়েটি ফায়ারের শব্দ শোনা গিয়েছে।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভিন তিবিরিজী জানান,গত কাল ঘুমধুম এলাকায় যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিসৃষ্টি হয়েছিল তার কারণে ঘুমধুম পরীক্ষা কেন্দ্রের ৪৯৯ জন শিক্ষার্থীদের কক্সবাজার উখিয়ার কুতুপালং স্কুল কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে এবং পরীক্ষার্থীদের পৌঁছে দিতে পর্যাপ্ত গাড়ির ব্যাবস্থা করা হয়েছে।সীমান্ত পরিস্থিতি উত্তপ্ততার কারনে ঘুমধুমের পরীক্ষা কেন্দ্র স্থানান্তর করা হয়েছে।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভিন তিবিরিজী এতথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের সীমান্তের পরিস্থিতি ভালনা। যে কোন মূহুর্তে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ঘুমধুমের এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রটি সরিয়ে নিকটবর্তী কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঘুমধূুমের এই কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর মোট সংখ্যা ৪৯৯ জন বলেও জানান তিনি।