আমাদের দেশে অনেক রকম মৌসুমি ফলের বিভিন্ন সময় দেখা মেলে। এর মধ্যে দেশি ফল আমড়া মুখরোচক ও টকমিষ্টি স্বাদের । টকমিষ্টি স্বাদের এ ফলটি কাঁচা ছাড়াও আচার, চাটনি, জ্যাম ও রান্নাসহ বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যায়। আমড়ার অনেক আয়ুর্বেদিক গুণাগুণ রয়েছে। এটিকে আয়ুর্বেদে বলা হয় আম্রতক। এর গাছেরও রয়েছে অনেক ঔষধি গুণাগুণ। এর বিভিন্ন অংশ ডায়রিয়া, কানের ব্যথা, ক্ষত এবং হাইপারসিডিটি চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।
এ ফলটি স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক উপকারী। এটি মুখের রুচি ফিরিয়ে আনতে অনেক কার্যকরী। একটি আপেলের চেয়েও বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও আয়রন থাকে একটি আমড়াতে। এ কারণে একে গোল্ডেন আপেলও বলা হয়ে থাকে। ডায়রিয়া, জ্বলাপোড়া, জ্বর, হজমের সমস্যায় ও কফসহ নানা রকম সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে আমড়া।
পেশিশক্তি বৃদ্ধি করে
আমড়াতে থিয়ামিন নামের একটি উপাদান পাওয়া যায়, যেটি মানুষের শরীরে পেশি সংকোচন ও স্নায়ু সংকেত সঞ্চালনে সহায়তা করে। তাই আমড়া মানুষের পেশির দুর্বলতা দূর করে তাকে শক্তিশালী করতে উপকারী হিসেবে কাজ করে।
ভিটামিন সির ভালো উৎস
আমড়াতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। এ কারণে এটি শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশ যেমন হাড় ও দাঁতের রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতসহ নানা রোগের নিরাময়ে অনেক উপকারী ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া আমড়াতে থাকা ভিটামিন সি মানুষের দেহের প্রোটিন কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে ত্বকের উজ্জ্বলতা, দৃঢ়তা বজায় রাখতে এবং ত্বকের বলিরেখা প্রতিরোধেও অনেক ভালো কাজ করে।
হজমে উপকারী
আমড়ায় অনেক পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ থাকে। এ কারণে এটি হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে অনেক কার্যকরী। এ ছাড়া হজমের কারণে যে সমস্যাগুলো দেখা দেয়; যেমন গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি সমস্যা দূর করতেও অনেক উপকারী ভূমিকা রাখে এটি। আর নিয়মিত খাবারের পর আমড়া খেলে তা ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে অনেকটাই।
হিমোগ্লোবিনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে
আমড়াতে প্রচূর পরিমাণে আয়রন থাকার কারণে এটি শরীরে হিমোগ্লোবিন এবং মায়োগ্লোবিন উৎপাদনে সহায্য করে। আর এর ফলে শরীরে অক্সিজেন পরিবহণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া আমড়াতে শরীরের রক্তাস্বল্পতা এবং অন্যান্য রক্তের সমস্যা প্রতিরোধেও অনেক উপকারী।
হাড়কে মজবুত করে
আমড়াতে অনেক বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। তাই নিয়মিত এটি খেলে তা আপনার প্রতিদিনের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করতে পারে। ফলে হাড়ের যেকোনো রোগ দূর করা ছাড়াও হাড়কে শক্তিশালী রাখতেও সাহায্য করে এটি।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ
আমড়াতে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইটোকেমিক্যাল থাকে। আর এ উপাদানগুলো আপনার শরীরের সিস্টেমের কারণে সহায়তা করে স্ট্রেসের প্রভাব কমাতে সহায়তা করে।
মূত্রবর্ধক
আমড়ার রসে অনেক ঔষধি গুণাগুণ পাওয়া যায়। এটি মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে পর্যাপ্ত প্রস্রাবের মাধ্যমে মানুষের শরীর থেকে তরল বের করে দিতে সহায়তা করে। ফলে শরীর থেকে সোডিয়াম কমে গিয়ে উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি কমে যায়। এ ছাড়া এটি সর্দি-কাশি ও জ্বরের সমস্যা দূর করতেও অনেক উপকারী ভূমিকা পালন করে।