চলতি বছরের শুরুতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের আগে কয়েক মিনিটের জন্য দেখা মিলেছিল পপির। তবে সরাসরি নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফেসবুক লাইভে এসে তিনি বোমা ফাটিয়েছিলেন চিত্রনায়ক জায়েদ খানের বিরুদ্ধে। করেছিলেন ভয়ানক অভিযোগ।দুই বছরের বেশি সময় ধরে লোকচক্ষুর অন্তরালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভিন পপি। অভিনেত্রী কোথায় আছেন, কেমন আছেন, কার সঙ্গে আছেন, কী করছেন- এসব প্রশ্নের উত্তর মিলছে না বিশ্বস্ত কোনো সূত্র থেকে।
এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায়ও আর মুখ দেখাননি পপি। তিনি কি আর কোনো দিন প্রকাশ্যে আসবেন না? লোকচক্ষুর অন্তরালেই কি থেকে যাবেন বাকি জীবন? দীর্ঘদিন লাপাত্তা থাকায় পপিকে নিয়ে এমন প্রশ্নই উঠেছে নায়িকার অনুরাগীসহ নানা মহলে।আড়ালে যাওয়ার কিছুদিন পর গুঞ্জন উঠেছিল, আদনান নামে একজনকে বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন পপি। তবে কে এই আদনান, কী করেন তিনি, সেসব জানা যায়নি। উঠেছিল পপির মা হওয়ার গুঞ্জনও। কোনো সূত্র মারফত সে খবরও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।পপির ঠিকানা সম্পর্কে জানা গিয়েছিল, গুলশানে স্বামীর দেওয়া নতুন ফ্ল্যাটে থাকছেন নায়িকা। এর কিছুদিন পর শোনা যায়, তিনি গাজীপুরে থাকছেন। সম্প্রতি আবার একটি সূত্র দাবি করছে, ঠিকানা বদলেছেন পপি। বর্তমানে থাকছেন রাজধানীর ধানমন্ডিতে।নানা গুঞ্জন তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এই অভিনেত্রীকে নিয়ে। কিন্তু কোনো নিশ্চিত খবর নেই তাকে নিয়ে। দেখা নেই সোশ্যাল মিডিয়াতেও। নায়িকার ফোনও বন্ধ। বন্ধ বললে ভুল হবে, পপি নাম্বার পাল্টে ফেলেছেন বলে শোনা যাচ্ছে।নায়িকার নতুন সেই নাম্বার নাকি শুধু তার কাছের মানুষদের কাছেই রয়েছে। এমনও শোনা যাচ্ছে, বাবা-মায়ের সঙ্গেও তেমন যোগাযোগ নেই পপির। তবে ছোট বোন সুমির সঙ্গে নাকি নিয়মিত তার যোগাযোগ আছে, দেখাও হয়। কিন্তু জনসম্মুখে আসছেন না সহসাই।যদিও পপি কবে কোন শর্তে প্রকাশ্যে আসবেন গত মে মাসে একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে তা জানিয়েছিলেন আরেক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার। এই অভিনেত্রী বলেছিলেন, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে তার সাধারণ সম্পাদকের পদ আদালতের রায়ে নিশ্চিত হলেই প্রকাশ্যে আসবেন পপি।নিপুণ বলেছিলেন, ‘আপনারা দেখেছিলেন, ইলেকশনের আগে পপি কিছু ভিডিওবার্তা পাঠিয়েছিল। তারপর আমরা ওর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি। যোগাযোগ হয়েছেও। এটুকু শুধু বলতে পারে, পপি ভালো আছে, সুস্থ আছে, নিরাপদে আছে। ফেরার বিষয়ে ও একটা কথাই আমাকে বলেছে যে, ‘তোমার (নিপুণের) পদটা যেদিন ফিক্সড হবে, সে দিনই আমি সামনে আসব।’অর্থাৎ, শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে উচ্চ আদালতে যে শুনানি চলছে, সেটির রায় নিপুণের পক্ষে গেলেই সামনে আসবেন পপি। যদিও এই পদে গত ২৮ জানুয়ারির নির্বাচনে শিল্পীদের ভোটে জিতেছিলেন জায়েদ খান। পরে তার প্রার্থিতা বাতিল হয়।শিল্পী সমিতির এই নির্বাচনের আগে গত ২৬ জানুয়ারি আড়াল ভেঙে হঠাৎই প্রকাশ্যে আসেন পপি। ফেসবুক লাইভে এসে চিত্রনায়ক জায়েদ খানের নাম উল্লেখ করে তিনি গুরুতর অভিযোগ করেন। জানান, জায়েদ খান নাকি তার বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে নানা হুমকি দিয়েছিলেন।ওই ভিডিওতে পপি দাবি করেন, জায়েদ খান তার কাছ থেকে টাকা ধার করে পিস্তল কিনেছিলেন। পরে সেই পিস্তলই তার বুকে ঠেকিয়েছিলেন। এমন অভিযোগও করেন, ঘটনাটি তিনি শিল্পী সমিতির তৎকালীন নেতাদের জানালেও তেমন কেউ এগিয়ে আসেননি। কোনো পদক্ষেপও নেননি।কিন্তু পপির মতো একজন জনপ্রিয় নায়িকার সঙ্গে জায়েদ খান কেন এমন আচরণ করেছিলেন? কোন অধিকার তার প্রতি? এফডিসিতে কান পাতলে এখনো শোনা যায়, জায়েদ-পপির প্রেমের গুঞ্জন। গোপনে তাদের বিয়েও হয়েছিল। বিয়ের পর তারা নাকি রাজধানীর ইস্কাটনে বাসা ভাড়া করে থাকতেন।২০২০ সালের শুরুতে জায়েদ-পপির বিয়ের কাবিননামার একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল। যা তাদের বিয়ের গুঞ্জনকে আরও জোরালো করে। এছাড়া ইস্কাটনের বাসায় জায়েদ-পপির বিয়ের প্রথম বার্ষিকী পালনের ছবিও ফাঁস হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।কিন্তু এসব গুঞ্জনের কথা কখনো স্বীকার করেননি পপি বা জায়েদ। ২০২০ সালে লাপাত্তা হওয়ার আগে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে পপি বলেছিলেন, ‘বিয়ে করলে লুকিয়ে করব না, সবাইকে জানিয়ে করব। আপাতত বিয়ের কোনো চিন্তা নেই। যখন করব, তখন সবাই জানতে পারবেন।’যদিও সেই পপি গোপনেই বিয়ের কাজটা সেরে ফেলেছেন বলে জোর গুঞ্জন। এমনকি, পুত্রসন্তানের মাও নাকি হয়েছেন। শোনা যায়, পপি আর কখনো অভিনয়ে ফিরবেন না। স্বামীর চাওয়া পূরণ করতেই নাকি এমন সিদ্ধান্ত। যদিও এ গুঞ্জনেরও কোনো সত্যতা মেলেনি।