রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) প্রথমবারের মতো আয়োজিত ‘ফুড অ্যান্ড কেমিক্যাল ল্যাব এক্সপো ২০২২’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, মঙ্গা কেটে গেছে। এখন পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে। যে খাবার খেয়ে মানুষ নানা রোগে ভোগে তা খাদ্য হতে পারে না। এজন্য খাদ্য নিরাপদ কি না তা ল্যাবে পরীক্ষা করার দরকার আছে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও মঙ্গা কাটিয়ে আমরা সবাই পেট ভরে ভাত খেতে পারছি। কিন্তু এখন প্রয়োজন পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্যের। নিরাপদ ও পুষ্টিমান সম্পন্ন খাবার তৈরি করতে পারলে বিদেশেও রপ্তানির ক্ষেত্রে বিশ্বাস ও যোগ্যতা অর্জন সম্ভব হবে। সে জন্য যারা বিদেশে খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করে রপ্তানি করে তাদেরকেও সচেতন হতে হবে।
তিনি বলেন, অনেকেই খাদ্যে রং মেশান। সেটা খাদ্যের রং কি না তা দেখতে হবে। কেননা খাদ্যের রং অনেক দামি। তবে খাদ্যের রং ব্যবহার না করে সাধারণ মানের রং ব্যবহার করলে খাদ্য অনিরাপদ হয়ে যায়।
খাদ্যে ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ বা জরিমানা করেই কিন্তু সমাধান পাওয়া যাবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার আগে খাদ্য উৎপাদনকারীদের মনের ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করতে হবে। বিশ্ববাজারে খাদ্য পণ্য রপ্তানিতে আমরা এখনও ভালোভাবে স্থান করতে পারিনি। ল্যাবরেটরি পর্যাপ্ত না হলে মানুষ চাইলেও পরীক্ষা করতে পারেন না। এজন্য সরকার চেষ্টা করছে পরীক্ষাগার যেন সহজলভ্য করা যায়।
খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, খাদ্যমান পরীক্ষার জন্য সরকার ইতোমধ্যে দেশের ৮ বিভাগে ল্যাবরেটরি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া ৮টি মোবাইল ভ্যান ল্যাব ও জাইকার সঙ্গে আন্তর্জাতিকমানের টেস্টিং ল্যাব স্থাপনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
অনুষ্ঠানে খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে যার যার অবস্থান থেকে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তায় মানুষের সচেতনতা নিয়ে কাজ করতে হবে। আশা করি দেশের বিভাগগুলোতে নিরাপদ খাদ্য পরীক্ষার ল্যাব দ্রুত পৌঁছে দেওয়া হবে।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আবদুল কাইয়ুম সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি চিফ অব মিশন হেলেন লাফেইভ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সরকারি, অ্যাকাডেমিক, গবেষণাভিত্তিক ও বেসরকারি পর্যায়ের ৪৪টি ল্যাব প্রদর্শনীতে অংশ নেয়। এর মাধ্যমে সরকারি ও বাণিজ্যিক ল্যাব বা পরীক্ষাগারের সেবাসমূহ প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে জনসচেতনতা গড়ে তোলা এবং পরীক্ষাগারগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন, যোগাযোগ ও সহযোগিতা উৎসাহিত হবে বলে আয়োজকরা মনে করেন।