জব্দ করা পণ্য কী করা হবে সেই উপায় সম্পর্কে গত রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) একটি বিধিমালা জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) । এতে বিভিন্ন পণ্যের নিষ্পত্তি কীভাবে হবে তা বলা হয়েছে। বিধিমালায় নিলাম কিংবা বিভিন্ন সংস্থার কাছে বিক্রি বা হস্তান্তর—দুই ধরনের পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে।
দেশের ভেতরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে অবৈধ মদ ও মদজাতীয় পণ্য এবং সিগারেট জব্দ করেন। কখনও তারা শাড়ি, থ্রি পিস, সয়াবিন তেল, চিনি, লবণ, ডাল জব্দ করে থাকেন। কখনও প্রাণী বা প্রাণীর দেহাবশেষ জব্দ হয়, কখনও প্রত্নতত্ত্ব সামগ্রী জব্দ হয়ে থাকে। অনেক সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করে থাকেন। কখনও বা ওষুধের কাঁচামাল, অবৈধ সুতা আটক করেন, কখনও সোনা, রুপা, প্লাটিনাম, হীরা বা অনুরূপ ধাতু ও গয়না এবং ডলারসহ বৈদেশিক মুদ্রা জব্দ করেন।দেখা যায়, দেশের কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনগুলোতে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের পণ্য আটক হচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোথায় যায় এই সব আটক হওয়া পণ্যগুলো।
বিধিমালায় ৯ ধরনের পণ্য নিলাম ছাড়াই সরাসরি বিভিন্ন সরকারি দফতর বা সংস্থার কাছে বিক্রি বা হস্তান্তর করা যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে সয়াবিন তেল, চিনি, লবণ ও ডালের মতো পচনশীল পণ্য আটক বা বাজেয়াপ্ত হলে তা সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশের (টিসিবি) কাছে বিক্রি করতে হবে। চোরাচালানের দায়ে আটক করা ও বাজেয়াপ্ত পণ্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভাণ্ডারে জমা দিতে হবে।
মূলত, মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আনলে, পণ্য ছাড়িয়ে না নিলে ও নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি করলে ওই পণ্য নিলামে তোলা হয় বা বাজেয়াপ্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
যদি সুতা জব্দ হয় তাহলে আটক হওয়া সব সুতা তাঁত বোর্ডকে দিতে হবে। ওই সুতা তাঁত বোর্ডে নিবন্ধিত প্রাথমিক তাঁতি সমিতির মধ্যে সংরক্ষিত মূল্যে বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।
যদি সোনা, রুপা, প্লাটিনাম, হীরা বা অনুরূপ ধাতু ও গয়না এবং ডলারসহ বৈদেশিক মুদ্রা আটক হয় তাহলে তা বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থায়ীভাবে হস্তান্তর করতে হবে।
যদি বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ আটক হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতামতের ভিত্তিতে প্রতিরক্ষা বাহিনী বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে হস্তান্তর করতে হবে।
যদি মদ ও মদজাতীয় পণ্য এবং সিগারেট আটক হয় তাহলে পর্যটন করপোরেশন বা ডিপ্লোম্যাটিক বন্ডেড প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করতে হবে।
যদি প্রত্নতত্ত্ব সামগ্রী আটক হয় তাহলে তা দিতে হবে জাদুঘর বা সরকারি দফতরকে। এ ছাড়া ওষুধের কাঁচামাল ধরা পড়লে ঔষধ প্রশাসনের অনুমোদন সাপেক্ষে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার বা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ওষুধ কোম্পানিকে দিতে হবে।
যদি প্রাণী বা প্রাণীর দেহাবশেষ আটক হয় তাহলে সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কাছে বিক্রি বা বিনা মূল্যে হস্তান্তর করা যাবে। এসব পণ্য ছাড়া অন্য কোনও পণ্য আটক হলে নিলাম করতে হবে। তবে শাড়ি, থ্রি-পিস, কম্বল, লুঙ্গিসহ বিভিন্ন ধরনের কাপড় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভাণ্ডার না নিলে নিলাম করা যাবে।