" />
বুধবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) সংলাপে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে গিয়ে কখনও খালি হাতে ফেরেননি দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এবার তিস্তা না হলেও কুশিয়ারা হয়েছে।
কাদের বলেন, “আমি তো একটাতেই খুশি। কেন? বর্তমান সংকটে আমরা কী দেখি। আমার জনগণকে বাঁচাতে হবে। বর্তমান সংকট মোকাবেলার যা যা দরকার, যা যা আমরা চেয়েছি ভারত সবই দিয়েছে।
“হবে… কুশিয়ারা হয়েছে, তিস্তাও হবে। ভারত অস্বীকার করেনি, আর শেখ হাসিনাও ভুলে যাননি তিস্তার কথা বলতে। আমরা ভুলে যাইনি।”
তিস্তার সঙ্গে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ‘স্বার্থ রয়েছে’ মন্তব্য করে কাদের বলেন, “সেটা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে অগ্রগতি হচ্ছে। আমি তো আশা করি অদূর ভবিষ্যতে সেটাও হবে। আপাতত যা পেয়েছি, আমি মনে করি তা যথেষ্ট।”
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে বাংলাদেশ ‘কিছুই পায়নি, বরং দিয়ে এসেছে’- বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, “বিএনপি সরকারের সময়ে বেগম জিয়া তো বারবার যাননি। একবার সফরে গিয়েও আমাদের আসল কথা, পানি চুক্তির কথা বলতে… এয়ারপোর্টে সাংবাদিকদের সামনে বললেন, ‘আমি তো ভুলেই গেছি’।
“যারা এই ধরনের সেনসেটিভ ইস্যু ভুলে যায়…! শেখ হাসিনা কিছু ভোলেন না। তিস্তা এবার হয়নি, কুশিয়ারা হয়েছে। সাতটি সমঝোতা স্মারক ও পাঁচটি চুক্তি হয়েছে। আমরা খালি হাতে ফিরে আসিনি।”
বিএনপি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ‘নষ্ট করেছে’ মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, “বিএনপির তো পুরোপুরি না পাওয়ার হতাশা। আমাদের না পাওয়ার হতাশা নেই। বন্ধুত্ব সুদৃঢ় করেছি। ২১ বছর আপনারা দেয়াল তুলেছেন। দেয়াল তুলেছেন ভারতের সঙ্গে। সম্পর্কে সংশয় আর অবিশ্বাসের দেয়াল। সেই দেয়াল আমরা ভেঙে দিয়েছে।
“সেজন্য সীমান্ত চুক্তির বাস্তবায়ন হয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবে ছিটমহল বিনিময় হয়েছে যেটা পৃথিবীর কোথাও হয়নি। না পাওয়ার হতাশা আপনাদের মধ্যে আছে কারণ আপনারা ভুলেই যান আসল কথা বলতে। আমরা বন্ধুত্ব চাই। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকলে সব সমস্যার সমাধান হবে।”
ইভিএম ব্যবহার না করার জন্য ৩৯ নাগরিকের আহ্বানের বিষয়ে কাদের বলেন, “ইসির সঙ্গে সংলাপে আমরা ৩০০ আসনে ইভিএম চেয়েছি। গত নির্বাচনে চেয়েছি, এবারও আমরা বলেছি ৩০০ আসনে ইভিএম চাই। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে কমিশন যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই ঠিক।”
বিএনপির আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা অনেক কিছু সহ্য করছি। রাস্তা অবরোধ করে মানুষের চলাচল বন্ধ করে সংঘাত বাধালে, পুলিশের উপর হামলা করে… কোথাও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে।
“প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গায়ে পড়ে কারও সঙ্গে ঝগড়া করবে না। কিন্তু আমরা যদি হামলায় আক্রান্ত হই, তখন কি আমরা চুপচাপ বসে থাকব? কর্মীরা কি চুপচাপ বসে থাকতে রাজি হবে?”ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে যে জট সৃষ্টি হয়েছিল, তার সমাধান হয়েছে জানিয়ে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, “যে সাড়ে ১২ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান থেমে ছিলো সেখান থেকে প্রায় সাড়ে ১১ লাখ আমরা দিয়ে দিয়েছি। বাকিগুলো দ্রুত দেওয়া হবে।”
অক্টোবরে কর্ণফুলী টানেল, ডিসেম্বরে মেট্রোরেল
অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে কর্ণফুলী টানেল ও ডিসেম্বরে মেট্রোরেল উদ্বোধন করা হবে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ৮৭টি ছোট, বড় ও মাঝারি প্রকল্প উদ্বোধনের অপেক্ষোয় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষে এগুলো উদ্বোধন হবে।
“মেট্রোরেল প্রকল্পের ৯৪ শতাংশ কাজ শেষ। মেট্রোরেলের উত্তরা-আগারগাঁও অংশের উদ্বোধন ডিসেম্বরে। আর মতিঝিল পর্যন্ত হবে আগামী বছরের ডিসেম্বরের আগেই।
মন্ত্রী বলেন, “মধুমতি সেতু উদ্বোধন হবে অক্টোবরে। কালনা সেতুর নাম ‘মধুমতি সেতু’ হবে, এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন। সেপ্টেম্বরে সেতুর কাজ শেষ হবে।
“আমাদের সরকারের আরেকটি বড় অর্জন চট্রগ্রামের কর্ণফুলীতে বঙ্গবন্ধু টানেল। এটি দুই ধাপে উদ্বোধন করতে হবে। প্রথমে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে বা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এক ভাগের উদ্বোধন হবে। আসার পথ অর্থাৎ অপর ভাগটি উদ্বোধন হবে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে।”