" />
ডিজেল তৈরির বিষয়ে মাহমুদ বলেন, ‘জ্বালানি উৎপাদন করা যায় কিনা তা নিয়ে ভাবছিলাম। এ বিষয়ে ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করি। প্রায় আট মাস বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পরিকল্পনাটি বাস্তবে রূপ দিতে সক্ষম হই।’ তিনি জানান, প্রথমে একটি বিশাল ট্যাঙ্ক ফেলনা প্লাস্টিক দিয়ে পূর্ণ করা হয়। এরপর তাপ দিয়ে সেই প্লাস্টিক গলিয়ে এক ধরনের বাষ্প উৎপন্ন করা হয়।
সেই বিশেষ বাষ্প নলের মাধ্যমে আরেকটি ট্যাঙ্কে নিয়ে শীতল করা হয়। বাষ্প শীতল হয়ে এক সময় ডিজেলে পরিণত হয়। মাহমুদের কারখানায় এখন দেড় টনের প্লাস্টিকপূর্ণ ট্যাঙ্ক থেকে এক হাজার লিটার ডিজেল উৎপাদন করা হয়। এতে সময় লাগে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা। বিশ্বজুড়ে তেলের বাজার যখন অস্থির, ঠিক তখন ফেলনা জিনিস থেকে ব্যবহারযোগ্য ডিজেল উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছেন এক ফিলিস্তিনি তরুণ। গাজা উপত্যকায় বসবাসরত এই তরুণের নাম মাহমুদ আল কাফারনেহ। তাঁর উৎপাদিত ডিজেলের মূল্য ইসরায়েলি বাজারমূল্যের অর্ধেক। তাই দিনে দিনে চাহিদা বাড়ছে মাহমুদের ডিজেলের। গাজার দরিদ্র কৃষক ও জেলেরাই তাঁর প্রধান ক্রেতা। চাহিদা সামাল দিতে ইতোমধ্যে গাজার উত্তরাঞ্চল জাবালিয়ায় একটি কারখানা স্থাপন করেছেন মাহমুদ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন উদ্যোগে গাজা অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও জ্বালানি সমস্যার সমাধান হলেও এর পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি রয়েছে। গাজার জাতীয় পরিবেশ ও উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক আহমেদ হিলিস উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই পদ্ধতিতে ডিজেল উৎপাদন শ্রমিকদের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর, কারণ পোড়া প্লাস্টিক থেকে বিষাক্ত কালো ধোঁয়া নির্গত হয়। শ্রমিকরা এই ধোঁয়ার মধ্যেই শ্বাস নিচ্ছে। তা ছাড়া প্রচণ্ড তাপের কারণে যে কোনো সময় ট্যাঙ্ক বিস্ম্ফোরণ হয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কারখানাটি লোকালয় থেকে অনেক দূরে জানিয়ে মাহমুদ এএফপিকে বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির সম্মুখীন হয়নি। এ ছাড়া আমরা কাজের সময় সব ধরনের নিরাপত্তা অনুসরণ করেই কাজ করি।