ফিফা কখনও কোনো দেশের ফুটবল সংস্থার উপর রাজনৈতিক বা সরকারি হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করে না এবং এই কারণে তারা নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল পাকিস্তানকেও।৭৫তম স্বাধীনতা দিবসের পরের দিন-ই বড়সড় এক দুঃসংবাদ পেল ভারত। দেশটিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। ফুটবলীয় কার্যক্রমে তৃতীয় পক্ষের প্রভাব খাটানোর অভিযোগে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন (এআইএফএফ) এই নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে। বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থার আইনে স্পষ্টভাবে বলা রয়েছে, ফিফা স্বীকৃত প্রতিটি দেশের ফুটবল সংস্থা হবে স্ব-শাসিত।
কী কারণে এই নিষেধাজ্ঞা
ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে গত ১২ মে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন দিল্লি ফুটবল ক্লাবের শীর্ষ কর্তা। তিনি অভিযোগ জানান, বেআইনিভাবে এক দশকের বেশি সময় এআইএফএফ-এর শীর্ষ পদ দখল করে বসে রয়েছেন প্রফুল প্যাটেল।
সেই মামলার শুনানিতে ভারতের শীর্ষ আদালত রায় দেন, নির্বাচন করে নতুন কমিটি গঠন না হওয়া পর্যন্ত ফেডারেশনের সমস্ত দায়িত্ব এবং কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে তিন সদস্যের সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটির মাধ্যমে।
এর পরই শুরু হয় জটিলতা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর ভারতীয় ফুটবলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসে ফিফা এবং এএফসির প্রতিনিধি দল। ওই সফরে এসে ফেডারেশনের দায়িত্বে থাকা সিওএ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয় প্রতিনিধি দলের।
ফিফা স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এআইএফএফ-এর নতুন সংবিধান চূড়ান্ত করতে হবে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে। নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। নির্বাচনে যারা জিতবেন, সেই কমিটিকে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু করতে হবে।
ফিফার এই নির্দেশের পরই স্পষ্ট ছিল, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে না পারলে নির্বাসনের মুখে পড়তে হবে ভারতীয় ফুটবলকে। ৩১ জুলাই পেরিয়ে যাওয়ার পর আরও ১৫ দিন অতিরিক্ত সময় দিয়েও যখন কাজ হয়নি, তখন ভারতীয় ফুটবলে নেমে এলো ফিফার শাস্তির খাড়া।
হাতছাড়া হওয়ার পথে অনূর্ধ্ব-১৭ নারী বিশ্বকাপ
চলতি বছর ১১ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর ভারতে অনূর্ধ্ব-১৭ নারী বিশ্বকাপ আয়োজিত হওয়ার কথা। কিন্তু এই নির্বাসনের ফলে বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ হারাতে পারে ভারত।
কীভাবে নিষেধাজ্ঞা মুক্ত হতে পারে ভারতের ফুটবল
এআইএফএফকে ফিফার নির্বাসন থেকে মুক্ত হতে হলে সিওএ’কে সরতে হবে এবং ক্ষমতায় আসতে হবে এআইএফএফ-এর নতুন এক্সিকিউটিভ কমিটিকে। নতুন এক্সিকিউটিভ কমিটি এআইএফএফ-এর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ হাতে পেলে তবেই এই নির্বাসন থেকে মুক্ত হবে ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা।