ক্ষয়ক্ষতির বর্ণনা ও ছবিতে মনে হচ্ছে, ক্ষেপণাস্ত্র দুটি ক্ষতি যা করার তা কেবল ওই বারান্দারই করেছে। জাওয়াহিরি মারা গেছেন, আর কারও কোনো ক্ষতি হয়নি। এই সফলতা ভবিষ্যতে এমন হামলার আশঙ্কাও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। অন্যান্য দিনের মতো গত রোববার সূর্যোদয়ের ঘণ্টাখানেক পর কাবুলের শহরতলির বাড়ির বারান্দায় এসে দাঁড়ান দীর্ঘদিন ধরে আল কায়দাকে নেতৃত্ব দিয়ে যাওয়া আয়মান আল-জাওয়াহিরি। অনেক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মিসরীয় এ জিহাদি যে ফজরের নামাজের পর বারান্দায় যেতে পছন্দ করতেন, তার খবর আগেই মিলেছিল।
রোববার হলো সেটিই। যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ক্ষেপণাস্ত্র স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ১৮ মিনিটের দিকে বারান্দাতে আঘাত হানলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন আল কায়দার ৭১ বছর বয়সী শীর্ষ নেতা। অথচ ঘরের ভেতরে থাকা তাঁর স্ত্রী ও কন্যা থেকে যান অক্ষত।জাওয়াহিরিকে হত্যায় ড্রোন থেকে ‘হেলফায়ার’ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয় বলে মার্কিন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জানা গেছে। এই ‘হেলফায়ার’ আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য। হেলিকপ্টার, স্থলে চলা যান, জাহাজ, বিমান, মনুষ্যবিহীন ড্রোনসহ নানা প্ল্যাটফর্ম থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়া যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হামলার আগে নানামাত্রিক পদ্ধতিতে তথ্য নেওয়া হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিচে থেকে ধারণা পাওয়া যায় না, এমন দূরত্ব থেকে মার্কিন ড্রোন কয়েক সপ্তাহ বা মাস ধরে হামলার স্থানটির ওপর নজর রেখেছে বলে অনেকের অনুমান।
এদিকে জাওয়াহিরি নিহত হওয়ার পর হামলার আশঙ্কায় সতর্কতা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা নিজ দেশের নাগরিকদের নিশানা করতে পারে জঙ্গিরা- এমন আশঙ্কা করছে দেশটি। সে লক্ষ্যেই সতর্কবার্তা জারি করেছে জো বাইডেন প্রশাসন।
সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, জাওয়াহিরির মৃত্যুর পর আল কায়দা বা অন্য কোনো জঙ্গি সংগঠন প্রতিশোধ নিতে আমেরিকার নাগরিক বা আমেরিকার কোনো প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা চালাতে পারে। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার সব নাগরিককে চূড়ান্তভাবে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বিদেশে ভ্রমণের সময় তাঁদের সব রকম সতর্কতা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। খবর বিবিসির।