বিদেশি উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ ছাড়াই নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা এই প্রকল্প উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শনিবার রচিত হবে নতুন ইসিহাস। শনিবার সকাল ১০টায় মাওয়া প্রান্তে দেশের দীর্ঘতম সেতুটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে দিয়ে রাজধানীর সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হবে দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চল।দেখতে দেখতে শেষ হয়েছে বছর, মাস ও দিনের গণনা।
এবার শুরু হয়েছে ঘণ্টা গণনা। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দেশের ১৭ কোটি মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এজন্য আজকের রাতটি পেরোনোর অপেক্ষা মাত্র। সাড়ে ছয় বছরের নির্মাণপ্রমত্তা পদ্মার বুক চিড়ে দাঁড়ানো সেতুটির উদ্বোধনকে ঘিরে সারাদেশে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। প্রতিটি জেলায় উৎসব করতে নানা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। রাজধানীও সেজেছে নতুন আমেজে। মানুষের মধ্যে অন্যরকম উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। বুননে পদ্মার দুই পাড় এক করতে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো স্বপ্নের সেতুটি উদ্বোধন হতে যাচ্ছে শনিবার সকালে।
নির্মাণকাজ শেষে ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতু কর্তৃপক্ষকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতু বুঝিয়ে দিয়েছে। সেতুর উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে সেতু এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছে। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে দেশি-বিদেশি অতিথিদের।
দেশের বৃহত্তম পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার। এই সেতু রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলাকে যুক্ত করবে।
মাওয়া প্রান্তে সেতু উদ্বোধনের পর সুধী সমাবেশে অংশ নেবেন সরকারপ্রধান। এরপর বিকালে মাদারীপুরের শিবচরের বাংলাবাজার ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ঘাট এলাকায় জনসভায় বক্তব্য দেবেন শেখ হাসিনা। সমাবেশ সফল করতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ।
সেতু উদ্বোধনকে ঘিরে শিবচরে ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেস হাইওয়ে সেজেছে বর্ণিল সাজে। বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় প্রস্তুত করা হয়েছে মঞ্চ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেতুর টোলপ্লাজা থেকে কাওড়াকান্দি পুরনো ফেরিঘাট এলাকার চারপাশের আট কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সাত শতাধিক মাইক লাগানো হয়েছে। লঞ্চের যাত্রী নামানোর জন্য নতুন করে বসানো হয়েছে ১৫টি পন্টুন। ৫০০ অস্থায়ী শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে। খাওয়ার পানির জন্য বসেছে ৫০০ কল। জনসভাস্থল, নৌপথ ও স্থলপথে পুলিশ, র্যাবসহ বিভিন্ন আইন- শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সাড়ে পাঁচ হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এজন্য সাজানো হয়েছে ত্রিমাত্রিক নিরাপত্তা বলয়। সমাবেশ ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। র্যাবের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।