সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এমন মন্তব্য করেন তিনি।বন্যার্ত দুর্গতদের পাশে না দাঁড়িয়ে বিএনপি নেতারা ভাষণ দিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের দলের নেতাকর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। আর অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে, চেয়ারপারসনের কার্যালয় এবং প্রেস ক্লাবে বসে বিএনপির নেতারা নানা ধরনের কথা বলছেন। রাজনীতি তো হচ্ছে মানুষের কল্যাণের জন্য, দেশ-সমাজ এবং মানব সেবার জন্য। সেটি না করে তারা বসে বসে কথা বলছে।
তিনি বলেন, তারা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াননি। আজ পর্যন্ত দাঁড়ানোর কোনো নির্দেশনাও দেননি। অথচ আমাদের নেত্রী সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশনা দিয়েছেন। তারাতো পাশে দাঁড়াননি, বসে বসে শুধু ভাষণ দিচ্ছেন।
ড. হাছান বলেন, বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী প্রশাসনসহ আমাদের দলের সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন, বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। তিনি সেনাবাহিনীকে কাজে লাগিয়েছেন। আমাদের দলের নেতাকর্মীরা নিজেরাও বন্যায় প্লাবিত। তাদেরও ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। এরপরও প্রশাসনের পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীরা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
ছাত্রলীগের একজন নেতা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু তো তাদের জন্য একটি যন্ত্রণা। বিএনপি-জামায়াত এবং যারা পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করেছিল, তাদের জন্য এটি একটি যন্ত্রণার বিষয়। কারণ পদ্মা সেতু হোক তারা চায়নি। তাই এটা হলো একটা জ্বালা, আর উদ্বোধন হলে তো আরও বড় জ্বালা। সে জ্বালা থেকেই এসব কথা বলছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনে সরকার কোনো উৎসব করছে না। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ আজ উল্লসিত। দেশের মানুষ এটিকে শুধু একটি সেতু হিসেবে নেয়নি। এটি আমাদের সক্ষমতার প্রতীক। এখানে একটি জনসভা হবে আর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। তারা চায় না পদ্মা সেতু উদ্বোধন হোক। তাই এটিকে বানচাল করতে নানা পরিকল্পনা করেছিল, এর অনেকগুলো নস্যাৎ করা হয়েছে আর কিছু কিছু তারা করতে পেরেছে।
বন্যার বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, উত্তরাঞ্চলের বন্যার পানি এরই মধ্যে মধ্যাঞ্চলে এসেছে। এটি স্বাভাবিকভাবে দক্ষিণাঞ্চলে যাবে। খোদা না করুক, যদি ভবিষ্যতে এ রকম কোনো পরিস্থিতি হয় তাহলে আমাদের সেটা মোকাবিলা করতে পদ্মা সেতু সহায়ক হবে। এজন্যই পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়া দরকার।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, খালেদা জিয়া বলেছিলেন আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা সেতু করতে পারবে না। আবার বলেছিলেন বানালে সেটি জোড়াতালি দিয়ে হবে। এটি তো বিল্ডিংয়ের ছাদ না যে একবারে ঢালাই দিয়ে বানাবে। এটা ধীরে ধীরেই বানাতে হবে।
একদিনে এক হাজার মিলিলিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বন্যার ৮-১০ দিন আগে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার বৈঠকে বলেছিলেন, এবার বন্যা হতে পারে। তিনি আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ নন, তার সাধারণ জ্ঞান থেকে তিনি এ কথা বলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী এই বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনের সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়তে নির্দেশ দেন। তিনি সেনাবাহিনীকে কাজে লাগিয়েছেন। আমাদের দলের নেতাকর্মীদেরও নির্দেশ দিয়েছেন বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে।