শুক্রবার (১৭ জুন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের।দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় রোববার (১৯ জুন) অনুষ্ঠেয় সকল শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আগামী ১৯ জুন অনুষ্ঠিতব্য সকল শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি জেনারেল, এসএসসি ভোকেশনাল এবং দাখিল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পরীক্ষার পরিবর্তিত সময়সূচি পরে জানানো হবে।
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বেশ কয়েকটি উপজেলা বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। আজ শুক্রবার সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বানভাসি মানুষকে উদ্ধারে কাজ শুরু করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
এছাড়াও ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানা গেছে, ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানিও বাড়ছে। তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৩৩ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে নদ-নদীর পানি বেড়েছে নেত্রকোণাতেও। ফলে সেখানে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টা পর্যন্ত জেলার কলমাকান্দা উপজেলার প্রধান নদী উব্দাখালীর পানি বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
১৯ জুন বাংলা ১ম পত্রের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়ার কথা ছিল এবারের এসএসসি পরীক্ষা। রুটিন অনুযায়ী তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলার কথা ছিল ৬ জুলাই পর্যন্ত।
এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, এ বছর সাধারণ নয়টি বোর্ডের অধীনে ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭১১ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। এর বাইরে দাখিলে দুই লাখ ৬৮ হাজার ৪৯৫ জন আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালে এক লাখ ৬৩ হাজার ৬৬২ জন অংশগ্রহণ করবে। এবার দেশের ২৯ হাজার ৫৯১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করবে।
চলতি বছর ঢাকা বোর্ডের আওতায় মোট পরীক্ষার্থী তিন লাখ ৯৪ হাজার ৯৯৮ জন। এছাড়া রাজশাহীতে এক লাখ ৯৬ হাজার ৬০০ জন, কুমিল্লায় এক লাখ ৮৮ হাজার ৭১৪ জন, যশোরে এক লাখ ৭০ হাজর ৩৭৭ জন, চট্টগ্রামে এক লাখ ৪৯ ৭১০ জন, বরিশালে ৯৫ হাজার ৯৭৬ জন, সিলেটে এক লাখ ১৬ হাজার ৪২৭ জন, দিনাজপুরে এক লাখ ৭৩ হাজার ৯৬১ জন এবং ময়মনসিংহে এক লাখ ১২ হাজার ৯৪৮ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। সব মিলে নয় বোর্ডের অধীনে মোট ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭১১ জন অংশগ্রহণ করবে।
মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে নয় হাজার ৯৩টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। মোট ৭১৫টি কেন্দ্রে দুই লাখ ৬৮ হাজার ৪৯৫ জন অংশ নেবে। আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট দুই হাজার ৮১৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। দেশের ৮২৮টি পরীক্ষাকেন্দ্রে মোট এক লাখ ৫৩ হাজার ৬৬২ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে।
দেশের বাইরে আটটি দেশে এই পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। এর মধ্যে জেদ্দায় ৭০ জন, রিয়াদে ৪৮ জন, ত্রিপলিতে চারজন, দোহাতে ৬৮ জন, আবুধাবিতে ৫৯ জন, দুবাইয়ে ৩১ জন, বাহরাইনে ৫৩ জন এবং ওমানে ৩৪ জনসহ মোট ৩৬৭ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে।