" />
বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ১১ জুন রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কারামুক্তি ও গণতন্ত্রের মুক্তির দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, শেখ হাসিনা সেই দিন মুক্তি পেয়েছিলেন বলেই আমরা একটি দেশপ্রেমী সরকার পেয়েছি। আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের একমাত্র দেশপ্রেমী সরকার। কিন্তু আজো একটি সুযোগ সন্ধানী মহল এবং বিএনপি তাদের সংকীর্ণ, আত্মকেন্দ্রিক ও পশ্চাদপদ রাজনীতির কারণে আমাদের দেশপ্রেমী সরকারকে উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
পরশ বলেন, ১১ জুন শেখ হাসিনার মুক্তির মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে আসে। বিকাশ ঘটে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাঙালির গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়। সেই থেকেই তিনি আমাদের গণতন্ত্রের আলোকবর্তিকা, মাদার অব হিউম্যানিটি, জননেত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি জামায়াত জোটের অপশাসনের কারণেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ওয়ান ইলেভেন এসেছিল। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের একতরফা সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশে জারি হয় জরুরি অবস্থা। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আবরণে গঠিত হয় সেনানিয়ন্ত্রিত ‘অন্তবর্তীকালীন সরকার’।
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হল বিএনপি, জনগণের অধিকার হরণ করলো বিএনপি আর তথাকথিত সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার গ্রেপ্তার করল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের। সবচেয়ে বিস্ময়কর ঘটনা হল ইয়াজ উদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকার শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই। আর খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয় ৫৮ দিন পর ৩ সেপ্টেম্বর। ৫৮ দিন পর খালেদা জিয়াকে বাধ্য হয়ে গ্রেপ্তার করেছিল। কারণ শেখ হাসিনাকে মুক্তির দাবিতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ একাত্ম হয়ে গিয়েছিল। ঢাকা শহরের প্রায় ২৫ লাখ মানুষ শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর করে। ১/১১ ছিল একটা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, আসলে শেখ হাসিনাকে হটানোর প্রয়াস ছিল সেটি (এক ঢিলে দুই পাখি)।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়াকে হটাবার যথেষ্ট কারণ খালেদা জিয়া ও তার পুত্র তৈরী করেছিল তাদের পাঁচ বছরের শাসনামলে। কিন্তু আমাদের নেত্রীকে গ্রেপ্তারের কোনো কারণ বা ক্ষেত্র ছিল না। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে টার্গেট করা হয়েছিল ভিন্ন কারণে। কারণ তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা, তিনি একজন দেশপ্রেমী নেত্রী এবং তিনি পশ্চিমা শাসকদের রক্তচক্ষু ভয় করেন না। শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে সড়িয়ে দেওয়ার জন্য হাজির করা হয় ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও দেশবাসীর আন্দোলন, আপসহীন মনোভাব এবং অনড় দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। আমি গর্ব করে বলতে পারি যে, যুবলীগের নেতা-কর্মীরা তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শেখ হাসিনার মুক্তির আন্দোলনে সাহসী এবং বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
তিনি আরও বলেন, আজকের গণতান্ত্রিক ও জনমূখী বাংলাদেশকে নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এখনও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গভীর ষড়যন্ত্রের ভিতর দিয়ে এগোচ্ছে দেশ। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজে বের করতে হবে আমাদেরই। মনে রাখা দরকার সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যার মুক্তি না হলে অগণতান্ত্রিক সরকার অতীতের মতো দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকত, স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতো না, দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল হতো না, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হতো না, এগিয়ে যেতো না উন্নয়নের ধারা। সে কারণেই বাংলাদেশর রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জুন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এই দিন কেবল শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবসই নয়, এই দিনটি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার দিবস এবং মাইলফলক একটি অধ্যায়। ১/১১ এর কুশিলবরা তথাকথিত সুশীল সমাজের একটি অংশ আবারও মাথাচারা দিয়ে উঠছে, জনগণকে বিভ্রান্ত করতে তৎপর রয়েছে।
তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের সামনে অনেক কাজ। শেখ হাসিনা যে রাজনৈতিক মানদণ্ড স্থাপন করেছেন, সেটি অনুসরণ করতে হবে। সততা এবং নিষ্ঠার সাথে গণমানুষের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করতে হবে। আমাদের আগামীতে এদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদের সুশাসনের সংজ্ঞা শেখ হাসিনা রচিত করেছেন ইতোমধ্যেই, সেটি হচ্ছে মানবিকতা, ন্যায় পরায়ণতা ও স্বচ্ছতা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, শেখ হাসিনা যখন বিদেশে ছিলেন তখনও সংগ্রাম করেছেন। দেশের মধ্যে সেই কৈশোর থেকেই নানা আন্দোলন-সংগ্রামে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর থেকে আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে এই দেশের প্রধান নেত্রী হিসেবে গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।