১০ বছর আগের সেই ঘটনায় রোনালদোর কোন অর্থদণ্ড হবে না এমনটা তিন বছর আগে জানিয়েছিল আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়াতেই সেবার রায় এসেছিল সিআর সেভেনের পক্ষেই।
মায়োরগা আরও দাবি করেছিলেন সেই সময় তাকে লাস ভেগাসের একটি হোটেল রুমে নিয়ে যান রোনালদো। শুধু তাই নয়, মুখ বন্ধ রাখতে সে সময় তাকে ৩ কোটি ৫১ লাখ টাকাও নাকি দিয়েছিলেন ম্যানইউ তারকা।অবশেষে ধর্ষণের দায় থেকে মুক্তি পেলেন পর্তুগিজ সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। গতকাল স্কাই স্পোর্টস সূত্র নিশ্চিত করেছে বিষয়টি। ২০১৮ সালে মডেল ক্যাথরিন মায়োরগা অভিযোগ করেন ২০০৯ সালে নাকি তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালিয়েছিলেন পর্তুগিজ সুপারস্টার।
তবে রোনালদো সবসময়ই দাবি করে আসছিলেন তিনি নির্দোষ। এবার সেই স্বীকৃতি মিলল আদালত থেকেও। ইউএসএর জেলা জজ জেনিফার ডোরসে শুক্রবার কোর্ট থেকে মামলাটি খারিজ করে দেন। তিনি বলেন, ‘সংগৃহিত নমুনা ও দাখিলকৃত কাগজপত্রের মাঝে কোন বিশ্বস্ততা নেই।’
মামলাটা যে এমন পরিণতি পেতে পারে, তার আভাস মিলেছিল গত বছর। মায়োরগার কৌঁসুলির ব্যবহারের কারণে এই মামলা প্রত্যাহারের পরামর্শ দিয়েছিল লাস ভেগাসের আদালত।
অন্যতম বিশ্বসেরা ফুটবল তারকার মামলাটির রায়ে বিচারক জেনিফার ডরসি লেখেন, ‘অত্যন্ত উঁচু মানের একজন ব্যক্তির বিপক্ষে এই মামলা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ হারিয়েছেন মায়োরগা। অসদুপায়ে অর্জিত নথি তার এই অভিযোগকে অতিরঞ্জিত করেছে এবং মামলার অন্যান্য ভিত্তিকে শক্ত করেছে। ফলে শুধু তার স্মৃতি ও মূল কিছু বিষয়ে তার উপলব্ধির ওপর ভিত্তি করে অন্য কোনও রায় দেওয়া ভুল হতো।’
ডরসির মতে, এই মামলায় ব্যবহার করা নথি মায়োরগার কৌঁসুলি লেসলি স্টোভালের হাতে এসেছিল অসদুপায় অবলম্বনের মাধ্যমে, যে কারণে তা মামলায় ব্যবহার করা যেত না। এরপর ‘অসদুপায়ে অর্জিত ওই নথি’ হাতে গিয়েছিল মায়োরগার, যা পড়ে আমেরিকান ওই মডেলের স্মৃতি বিগড়ে গিয়েছিল। যার ফলে তার ওপর ভিত্তি করেও মামলার রায় দেওয়া সম্ভব ছিল না বলে রায়ে উল্লেখ করেন বিচারক ডরসি। এ কারণেই মূলত মামলার মীমাংসা করে দেন তিনি।
মায়োরগার কৌঁসুলি স্টোভাল ধর্ষণ মামলার নথি যোগাড় করেছিলেন ফুটবলের বিভিন্ন ফাঁস হওয়া তথ্যের জন্য বিখ্যাত রুই পিন্টোর কাছ থেকে। বিচারক জেনিফার ডরসি এসব নথিকে গোপনীয় হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যার ফলে এসব প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘চুরি করা গোপনীয় নথিগুলোকে স্টোভাল বারবার এই মামলায় ব্যবহার করে গেছেন, যা অসৎ আচরণের ইঙ্গিত দেয়। আর রেকর্ডে দেখা যাচ্ছে, তিনি আর মায়োরগা এই নথিগুলোকে বারবার যাচাই করে দেখেছেন, আর মায়োরগার অভিযোগের স্বপক্ষে ব্যবহার করেছেন।’
‘স্টোভাল ইচ্ছাকৃতভাবে তার প্রতিপক্ষের ব্যক্তিগত, গোপনীয় যোগাযোগগুলোতে বাগড়া দিয়েছেন। যখন তিনি নথি হাতে পেয়েছেন, তখন তিনি নৈতিক নির্দেশনা না মেনেই স্পর্শকাতর নথিগুলো সামাল দিয়েছেন।’
‘নথিগুলো তিনি তার মক্কেলের হাতে তুলে দিয়েছেন, যার ফলে এসব নথি তার মক্কেলের স্মৃতিকে কলুষিত করেছে, ঘটনার বিষয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে। আর তিনি (স্টোভাল) সেই নথির ওপর ভিত্তি করে তার অভিযোগ তৈরি করেছেন, যা বাদীর (মায়োরগা) শপথ যাচাই দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে।’